ইসাহাক আলী, নাটোর-নাটোরের এক সাবেক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অবৈধ উপায়ে অর্ধশত বিঘা জমি, ৫টি বাড়ি, গাড়ি, অসংখ্য প্লট ও ফ্যাল্টের পাশাপাশি টাকার পাহাড় গড়ে তোলার অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী। বিষয় গুলো তদন্ত করে বিচারের আওতায় আনার দাবী জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা, পুলিশ প্রধান ও দূর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। আলোচিত এই পুলিশ কর্মকর্তা আবেদ আলী নাটোরের লালপুর উপজেলার কদিমচিলান ইউনিয়নের গোধড়া গ্রামের মৃত শাহাদত আলী মোল্লার ছেলে। তিনি ট্রাফিক পরিদর্শক হিসেবে গত বছর চাকুরী থেকে অবসরে গিয়েছেন। এসব অভিযোগের বিষয়ে রোববার এই পুলিশ কর্মকর্তার নিজ গ্রামের সাধারণ মানুষের সাথে কথা বললে তারাও এই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিপুল পরিমান সম্পদ ও বাড়ি গাড়ি থাকার অভিযোগ করেন।
বিভিন্ন দপ্তরে পাঠানো আবেদন গুলোতে বলা হয়, স্থানীয় রাজাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক আবেদ আলী শিক্ষকতা শুরুর কিছু দিন পর পুলিশের সার্জেন্ট হিসেবে যোগদান করেন। তৎকালীন স্থানীয় সংসদ সদস্য ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ফজলুর রহমান পটলের সুপারিশে তিনি ঢাকা মহানগরে বদলি হন। সেখান থেকেই তিনি অবৈধ টাকা উপার্জন শুরু করেন। এই আসনের সাবেক প্রায় প্রতিটি সংসদ সদ্যসের সাথেই তিনি নিজের সুবিধার জন্য সখ্যতা গড়ে তোলেন। এই সখ্যতাকে পুঁজি করে চালিয়ে যান অবৈধ উপার্জন। এলাকার গোধড়া মৌজায় নিজের নামে এবং স্ত্রী সন্তানদের নামে ৫কোটি টাকা দিয়ে কিনেছেন আঠারো বিঘা জমি। স্থানীয় কদিমচিলান, ধলা, দাইড়পাড়া, মানিকপুর, ধানইদহ ও চাঁদপুর মৌজায় কিনেছেন প্রায় ৫০বিঘা জমি। বনপাড়া শহরের মিশন স্কুলের পাশে ৫কাঠার প্লট, বনপাড়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির পূর্ব পাশে তিন বিঘা জমি, হিরামন সিনেমা হলের পাশে আফতাবের বাড়ি সংলগ্ন ১০ কাঠার প্লট, মহিষভাঙ্গা মৌজায় জনৈক অশিত পাশের দেড় বিঘা জমি কিনেছে। সরকারকে কর ফাঁকি দিতে এসব প্রতিটি জমি খুবই কমদাম দেখিয়ে রেজিস্টি করেছেন। পৈত্রিক বাড়ি ছাড়াও বনপাড়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির পিছনে দুটি ও হিরামন সিনেমা হলের পাশে আফতাবের বাড়ি সংলগ্ন একটিসহ তার মোট ৫টি বাড়ি ও ঢাকার মোহাম্মদপুরে ফ্ল্যাট রয়েছে বলেও অভিযোগ করা হয়েছে। এলাকায় নিজের অবস্থান মজবুত করতে যেকোন মসজিদ মাদরাসায় দানের পাশাপাশি তিনি যেকোন নির্বাচন আসলে এলাকার প্রভাবশালী প্রার্থীদের পোস্টার ছাপিয়ে দেয়াসহ নানা ভাবে অর্থ সহযোগীতা করে আস্থাভাজন হয়ে ওঠেন। গ্রামের মসজিদ মাদরাসায় যাওয়ার পাশাপাশি নিজের বাড়িতে যাওয়ার পাঁকা রাস্তাও তিনি নিজের খরচে করেছেন বলে এলাকায় জনশ্রæতি রয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা, পুলিশ প্রধান ও দূর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত অভিযোগকারীরা আবেদ আলী ও তার স্ত্রীসহ পরিবারের সদস্য এবং স্বজনদের সকল ব্যাংক হিসাব অনুসন্ধানের পাশাপাশি তার সকল আয়ের বৈধতা যাচাই করে তাকে বিচারের আওতায় আনার দাবী জানিয়েছেন।
এ সব বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা আবেদ আলী সাংবাদিকদের বলেছেন, তার এত বাড়ি, জমি ও সহায় সম্পদ থাকার তথ্য সঠিক নয়। সারাজীবন চাকুরীর বেতনের টাকায় তিনি নিজের ও স্ত্রীর নামে ৫/৬বিঘা জমি কিনেছেন। পৈত্রিক সূত্রে কয়েক বিঘা জমি পেয়েছেন। নিজের জমি বিক্রি করে ঢাকার মোহাম্মদপুরে বসবাসের জন্য একটি ঠিকানা গড়েছেন। অভিযোগে যত জমি সম্পত্তির কথা বলা হয়েছে তার পিতা ও শশুরের মিলেও এত জমিজমা নেই।