ভোলা প্রতিনিধিঃ ভোলা-ঢাকা-ভোলা রুটের লঞ্চের কেবিনে লাশ বহন করে ৩৫০ বছরের গহনা নৌকা ও লঞ্চ চলাচলের ইতিহাসে নজির স্থাপন করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে ব্রাদার্স নেভিগেশন কোম্পানির এমভি কর্ণফুলী-১১ লঞ্চের ভিআইপি ডিলাক্স কেবিনে (এসি কক্ষ) এক অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকের লাশ বহন করা হয়। স্থায়ী সংরক্ষীত কেবিন চালু রাখার দাবী ভোলা বাসীর।
স্থানীয়রা জানায়, দ্বীপজেলা ভোলার মানুষ প্রতিনিয়ত ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় যাতায়াত করে। ভোলার বাইরে কেউ মারা গেলে লাশ আনা নিয়ে বিপাকে পড়তে হয়। লাশ পরিবহণের জন্য লঞ্চে নির্দিষ্ট স্থান ও হিমঘর (হিমাগার) না থাকায় স্বজনদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। সব সময় লঞ্চের ছাদে লাশ বা লাশবাহী কফিন রাখা হয়।
গত বছর থেকে প্রতিটি লঞ্চে হিমঘর রাখাসহ লাশের জন্য সংরক্ষীত তীতাতপনিয়ন্ত্রত কেবিনের দাবি জানিয়ে আসছে সাংবাদিকেরাসহ কয়েকটি সামাজিক সংগঠন। কয়েক দফা মানববন্ধনও করা হয়েছে। এ দাবির প্রতি নাগরিক কমিটির নেতারা একাত্মতা প্রকাশ করেছেন।
এর পরও নির্দিষ্ট হিমাগার রাখা হয়নি। ভোলার ৭ রুটে ৪০টি আধুনিক লঞ্চ চলাচল করে। কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত লঞ্চে যাত্রীসেবার নানা সুযোগ-সুবিধা থাকলেও লাশ পরিবহণের কোনো নির্দিষ্ট স্থান নেই।
চরফ্যাশন উপজেলার শশিভূষণ এলাকার সোনালী ইন্সুরেন্স কোম্পানির কর্মকর্তা মনির হোসেন জানান, ঈদের পরদিন তার বাবা প্রাথমিক স্কুলের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক গোলাম মোস্তফা অসুস্থ হয়ে পড়েন।
এরপর ঢাকার আগারগাঁওয়ের নিউরো সাইন্স হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়। সেখানে মঙ্গলবার রাত ৮টায় তিনি মারা যান। সদরঘাট থেকে রাত সাড়ে ১০টার দিকে বাবার লাশ কফিন ছাড়াই লঞ্চে তোলা হয়।
এ সময় লাশ নিয়ে তারা বিপাকে পড়েন। এমন পরিস্থিতিতে লঞ্চ কর্তৃপক্ষ ভিআইপি কেবিনে লাশ রাখার অনুমতি দেন। লঞ্চ মালিক ও স্টাফদের প্রতি কৃতজ্ঞ জানিয়ে তিনি বলেন, লাশ পরিবহণে ভাড়া নেওয়া না হলেও ছয় যাত্রীর জন্য তিন হাজার টাকা ভাড়া দিতে হয়েছে। বুধবার চরফ্যাশন গ্রামের বাড়িতে বাবার লাশ দাফন করা হয়েছে।
লঞ্চ মালিক সালাউদ্দিন মিয়ার দাবি-ভোলার ৩৫০ বছরের গহনানৌকা-লঞ্চ চলাচলের ইতিহাসে এই প্রথম ভিআইপি কেবিনে লাশ পরিবহণ করা হলো। লঞ্চ কোম্পানির ম্যানেজার মোঃ আলাউদ্দিন জানান, যাত্রীবাহী লঞ্চে লাশ পরিবহণে কিছু যাত্রীর আপত্তি থাকে। তবে আপত্তি উপেক্ষা করে শিক্ষক গোলাম মোস্তফার লাশ ভিআইপি কেবিনে রাখার ব্যবস্থা করা হয়। তিনি আরও বলেন, ভবিষ্যতে লঞ্চে হিমাগার রাখার পরিকল্পনা রয়েছে। কেবিন বুকিং মাস্টার মোঃ লিটন ও কেবিন ইনচার্জ মোঃ জাফর জানান, প্রতিবার লাশ পরিবহণের পর লঞ্চে দোয়া ও মিলাদ পড়ানো হয়। হযরত মাওলানা আবু তালহা জানান, মুসলমান মারা গেলে সাথে সাথে গোসল দিয়ে পবিত্র করে নিতে হবে। তার পরে যে কোন যানে মরদেহ বহন করা যাবে। যানে বহন পরবর্তীতে দোয়া ও মিলাদ পরানো কোন দূর্বল হাদিসেও পাওয়া যায়নি। স্থায়ী সংরক্ষীত কেবিন চালু রাখার দাবী ভোলা বাসীর।
প্রধান উপদেষ্টা : ড. সরকার মো.আবুল কালাম আজাদ, সম্পাদক ও প্রকাশক : একরামুল হক বেলাল
ঢাকা অফিস- ২২, মা ভিলা ,পূর্ব তেজতুরী বাজার, ফার্মগেট-১২১৫। ইমেইল-spnews17@gmail.com, রেলওয়ে পার্ক,পার্বতীপুর,দিনাজপুর। ০১৭১২৩৭০৮০০
© 2023 Spnewsbd. All rights reserved.