দুলাল সরকার, সৈয়দপুর-নীলফামারী প্রতিনিধি ঃ একযুগ আগে বিক্রি করে দেয়া জমি আবারও নিজের দাবি করে দখলে নিয়েছে বিক্রেতা। সেই সাথে ওই জমির পাশেই ক্রেতার পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত জমিও জবর দখল করেছে। এমন অপকর্মের প্রতিবাদ করায় ক্রেতা ও তার পরিবারের লোকজনকে একাধিকবার নির্যাতন করা সহ প্রাণনাশের চেষ্টা করে। স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধি ওই ভূমিদস্যু ও ইয়াবা ব্যবসায়ীর পক্ষপাতিত্ব করায় ভুক্তভোগী পরিবারটি বার বার আইনের আশ্রয় নিলেও প্রশাসনের সহযোগিতা না পেয়ে দুরাবস্থায় পড়েছে এবং জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় চরম আতঙ্কে দিনাতিপাত করছে। এমতাবস্থায় সুবিচারের দাবিতে সরকারের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ প্রত্যাশা করেছেন। সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১১ টায় নীলফামারীর সৈয়দপুর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এব্যাপারে মিডিয়ার সহযোগীতা চেয়েছেন নিগ্রহের শিকার সৈয়দপুর শহরের মিস্ত্রিপাড়া মন্দির রোড নিবাসী মৃত মোস্তফার ছেলে মো. খালিদ হোসেনের পরিবার। উপস্থিত ছিলেন, খালিদ হোসেনের স্ত্রী তারান্নুম আরা, ছেলে তাওসীফ হোসেন ও মেয়ে তাসনিয়া। এসময় খালিদ হোসেন বলেন, আমার প্রতিবেশী মৃত. মহির উদ্দিনের ছেলে মো. সোহেল (৪৪) ও মো. জুনায়েদ আক্তার (৪৬)। ১৯৯৮ সালে তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি আমার কাছে বিক্রি করে। যার দলিল নং ২৬১০/২৮৬৪ তাং ০১/০৬/১৯৯৮ ও ২১/০৬/১৯৯৮। এরপর থেকে ওই জমি আমি ভোগদখল করে আসছি। হঠাৎ গত এক বছর পূর্বে তারা বিক্রিকৃত ওই জমি তাদেরই আছে বলে দাবি করে সম্পূর্ণ গায়ের জোরে জবর দখলের জন্য একাধিকবার অপচেষ্টা চালায়। এতে বাধা দেয়ায় তারা আমাকে বেদম মারধর করে এবং প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। এর প্রেক্ষিতে আমি বার বার আইনের আশ্রয় নেই। এভাবে চলাবস্থায় গত ২০১৯ ইং সালে তারা নীলফামারী ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে আমাকেসহ আমার পরিবারের সদস্য ও এলাকার প্রায় ৭ জনের নামে মিথ্যে মামলা দায়ের করে। মামলা নং ৩০০/১৯। এই মামলার প্রেক্ষিতে আদালত কর্তৃক তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলে সৈয়দপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) যে প্রতিবেদন দেন তাতে উল্লেখ করা হয় যে, বিবাদমান জমিতে (বিত্বে) বাদী (সোহেল গং) এর কোন দখল নাই বরং বিবাদী অর্থাৎ আমার ১২ বছরের উপর দখল আছে। এতে আদালত প্রতিপক্ষের (সোহেল গং) ওই মামলা খারিজ করেন। এরফলে তারা নারাজি জানিয়ে উচ্চ আদালতে আবারও একটি মামলা করেন। যার নং ১৫১/২০০০। সেই মামলা এখনও চলমান। এমতাবস্থায় গত ১১/১১/২০২২ ইং সালে তারা রাত আনুমানিক ৩ টার দিকে আমার ওই বাড়িসহ পাশের জমিতে প্রথমে প্লাস্টিকের ও পরে টিনের চালা দিয়ে ঘর করে জোর পূর্বক দখলে নেয়। খবর পেয়ে সকালে গিয়ে প্রতিবাদ করলে তারা আমাদের উপর হামলা করে বেদম মারধর করে এবং প্রাণনাশের হুমকি দেয়। তখন এলাকাবাসী আমাদেরকে রক্ষা করে। এর ৫ দিন পর রাস্তায় একা পেয়ে তারা আবারও আমার উপর চড়াও হয় এবং প্রাণ নাশের হুমকি দেয়। স¤প্রতি ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানের পর তারা বিরোধপূর্ণ ওই জমির পাশে আমার আরেকটি জমিও জবরদখল করে আমার সীমানা প্রাচীরের ইটের ভিত্তির উপর জোরপূর্বক দেওয়াল নির্মাণ করছে। এতে সহযোগিতা করছেন স্থানীয় একজন জনপ্রতিনিধিসহ এলাকার উচ্ছৃঙ্খল কতিপয় যুবক। ফলে আমি চরম অসহায় হয়ে পড়েছি। তাদের একের পর এক জবরদস্তি ও বেআইনি কর্মকান্ডে দিশেহারা বোধ করছি। সোহেল গংরা দুধর্ষ ও সন্ত্রাসী প্রকৃতির, মাদক ব্যবসায়ী ও ইয়াবা মামলার আসামী হওয়ায় এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধি তার পক্ষে অবস্থান নেয়ায় আমরা আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে দিনাতিপাত করছি। আইনের আশ্রয় নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত বিচারের আশায় আছি। কিন্তু প্রশাসনের কোন সহযোগিতা না পেয়ে সমাজের বিবেক সংবাদকর্মীদের শ্বরণাপন্ন হয়েছি। যাতে আপনারা সরেজমিন ঘটনাস্থল গিয়ে তদন্ত করে প্রকৃত বিষয়টি মিডিয়ায় তুলে ধরেন। তাহলে সরকারের উর্ধতন কর্তৃপক্ষসহ মানবাধিকার সংগঠন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সুদৃষ্টি গোচর হয়। এতে আমরা সুবিচার পাবো বলে আশা করি।