ভোলা প্রতিনিধিঃ ভোলা জেলার ৭ উপজেলার বিভিন্ন বাজারের মুদি ব্যবসায়ীদের দোকানে সয়াবিন তেল খুজে পাওয়া যায়না গত তিন দিন ধরে। মজুদ করা কিছু দোকানে পাওয়া গেলেও দাম আকাশচুম্বি। সোমবার (২ মে) দুপুরে এমন অভিযোগ করেছেন সাধারণ ক্রেতারা।
সরজমিনে জানা গেছে, সয়াবিন তেল বাজার থেকে উধাও হয়ে যাওয়ায় সাধারণ ক্রেতারা তেল কিনতে পারছেন না। বাধ্য হয়ে বেশী মুনাফা লোভী ব্যবসায়ীদের মজুদ করা বেশী দামে সয়াবিন তেল কিনছেন ক্রেতা। এতে ক্রেতাদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। অনেক ব্যবসায়ী মানুষের মুখ দেখে তেল বিক্রি করেননা।
সদরের আলী নগরের চেয়ারম্যান বশির আহন্মেদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমি রবিবার পবিত্র রমজানে বেশ কয়েকটি মুদি দোকানে সয়াবিন তেল খুঁজে পাইনি। চরফ্যাশনের যুবনেতা এমরান হোসেন, মনপুরার ব্যবসায়ী আমির হোসেন, তজুমদ্দিনের সুমন, লালমোহনের লিটন, জনি, বোরহান উদ্দিনের-লিজা আক্তার, দৌলতখানের-জাকির হোসেন তালুকদার, সিরাজ, আলমগীর, বাংলাবাজারের স্বপন,গিয়াস উদ্দিনসহ অনেকেই জানান একই কথা।
রমজন মাসের শুরুতেই ভোলার বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধিতে দিশেহারা অবস্থা ক্রেতাদের। রমজান শুরুর সাথে সাথে বাজারে সিন্ডিকেট করে রুগ্ন গরু জবাই দিয়ে ৬৫০টাকা কেজি দরে বিক্রি করছে ব্যবসায়ীরা। তারা তাদের নির্দিষ্ট স্থানে ওই সব গরু জবাই দিয়ে মিশুক যোগে শহর, মহল্লার মোড়ে মোড়ে ও বাজারের দোকানে দোকানে সরবরাহ করে। বাস ষ্টান্ডের এক মাংশ ব্যবসায়ী জানান, এখন গরু জবাই করতে শারীরিক পরিক্ষা, সিল, স্বক্ষর ও অনুমতির দরকার হয়না। করোর আসারও দরকার নাই। জবাই করি আর বিক্রি করি। এর বেশী কিছু বলবোনা।
যে সব দোকানে সয়াবিন তেল পাওয়া যাচ্ছে সে সব দোকানীরা সয়াবিন তেল কেজি ২৪০ টাকায় বিক্রি করছেন। বাজার থেকে সয়াবিন তেল উধাও হয়ে যাওয়ার বিষয়ে ব্যবসায়ী ফিরোজ বলেন, আমাদের দোকানের সয়াবিন তেল ৩ মাস আগে শেষ হয়ে গেছে। বাজারে কোথাও এখন সয়াবিন তেল পাওয়া যাচ্ছে না। ফারুক বলেন, আমরা আজ অনেকটাই অসহায়-হতাশ। আমরা যারা সরকারি চাকরিজীবী তাদের আয়ের সাথে ব্যয় কোন ভাবেই মিলাতে পারিনা, তেল কিনতে গিয়ে ফেরত এসেছি।
কহিনুর ষ্টোরের মালিক জানান, সয়াবিন তেলের দাম বাড়ায় কোনো কোম্পানি তেল দিচ্ছে না। ফলে আমরা বিক্রিও করতে পারছি না। শুধু যে তেলের দাম বাড়ছে তা নয়, সব পণ্যের দাম বাড়তি বলে জানান এ দোকানি।
কাঁচাবাজার আড়তদার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোঃরফিকুল ইসলাম জানান, বিভিন্ন কোম্পানির ডিলারদের সয়াবিন তেল ভোলায় আসছেনা। তাই সয়াবিন তেলের সাময়িক সংকট দেখা দিয়েছে। কিন্তু সয়াবিন তেল বাজার থেকে উধাও হয়নি। কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) ভোলা জেলা শাখার সভাপতি মোবাশ্বির উল্যাহ চৌধুরী জানান, অতি মুনাফার আশায় কিছু অসাধু ব্যবসায়ী প্রতি বছর রমজান মাসে তেল, চিনি, ডাল, ছোলাসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেন। ফলে পণ্যের কৃত্রিম সংকট দেখা দেয়। আসলে কোনো সংকট নেই।
জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আকিব ওসমান জানান, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি রোধে জেলা প্রশাসন, ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, জেলা কৃষি বিপণন অফিস ও পুলিশ কঠোর অবস্থানে রয়েছে। নিয়মিত বাজার তদারকি করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে সয়াবিন তেল অতিরিক্ত দামে বিক্রি করার অপরাধে ব্যবসায়ীদের জেল-জরিমানা করা হয়েছে। এ ছাড়া দাম নিয়ন্ত্রণে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সুজিত হাওলাদার জানান, সয়াবিন তেলের কোন সংকট নেই। স্থানীয় কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী এটা করতে পারে। তিনি আরও বলেন, বাজার মূল্য নিয়ন্ত্রণে ভোলায় প্রতিদিনই ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালিত হচ্ছে। এ বিষয়ে দ্রæত ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানালেন তিনি। তবে কবে পর্যন্ত বাজারে তেল আসবে তা বলতে পারেননি তিনি। তেল আসার আগেই পানি দিয়ে ভোক্তারা ঈদ পার করে ফেলবেন বলে মন্তব্য করেন ফজলুল কাদের মজনু, আঃমমিন টুলু, মইনুল হোসেন বিপ্লব,মোশারেফ হোসন, নজরুল ইসরাম গোলদারসহ অনেকে।
প্রধান উপদেষ্টা : ড. সরকার মো.আবুল কালাম আজাদ, সম্পাদক ও প্রকাশক : একরামুল হক বেলাল
ঢাকা অফিস- ২২, মা ভিলা ,পূর্ব তেজতুরী বাজার, ফার্মগেট-১২১৫। ইমেইল-spnews17@gmail.com, রেলওয়ে পার্ক,পার্বতীপুর,দিনাজপুর। ০১৭১২৩৭০৮০০
© 2023 Spnewsbd. All rights reserved.