বিরলে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ অব্যাহত
আতিউর রহমান, বিরল (দিনাজপুর) ॥ বিরলে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সভাপতির দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে অধ্যক্ষ/প্রধান শিক্ষকের অপসারনের দাবিতে উপজেলার বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা গত কয়েকদিনে অব্যাহতভাবে বিক্ষোভ করেছে। এসময় অধ্যক্ষ/প্রধান শিক্ষকের কক্ষে তালা দেয়ার ঘটনাও ঘটেছে।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সাধারণ ছাত্ররা উপজেলার বিরল সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ, মাইনুল হাসান মহাবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষ সুব্রত কুমার অধিকারী এবং গত বৃহস্পতিবার রঘুপুর দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষক মোমিন উদ্দিনের পদত্যাগ এবং কামদেবপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও জনতা প্রধান শিক্ষক সেলিম এর পদত্যাগ ও কামদেবপুর দাখিল মাদ্রাসার সুপার আবুল কাশেম, মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক আব্দুল মজিদ এর পদত্যাগের দাবিতে বিদ্যালয় প্রাঙ্গন পদত্যাগের দাবিতে স্লোগানে প্রকম্পিত করে তোলে শিক্ষার্থী ও জনতা।
গত বৃহস্পতিবার কামদেবপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ সেলিম ও কামদেবপুর দাখিল মাদ্রাসার সুপার আবুল কাশেম সহ মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক আব্দুল মজিদ এর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগে এই ৩ শিক্ষকের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে ছাত্র- জনতা।
কামদেবপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ সেলিম ও দাখিল মাদরাসার সুপার আবুল কাশেম, সহকারী শিক্ষক আব্দুল মজিদ ছাত্র-জনতার তোপের মুখে পরলে সংবাদ পেয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে উত্তেজিত সাধারণ ছাত্র-জনতাদেরকে অপরাধীদের শাস্তির আশ্বাস দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। একইদিনে শহরগ্রাম ইউনিয়নের নাড়াবাড়ী সালাফিয়্যাহ দাখিল মাদ্রাসার সুপার মোঃ জসিম উদ্দিন সাধারণ ছাত্র-জনতার দাবির প্রেক্ষিতে চাকুরী হতে স্বেচ্ছায় ইস্তফা প্রদান করেন।
সম্প্রতি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্ররা বিরল সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে প্রধান শিক্ষক মনজুরুল হাসান এর পদত্যাগ দাবি করে আল্টিমেটাম দেন শিক্ষার্থীরা। প্রধান শিক্ষক অনুপস্থিত থাকায় পরবর্তীতে বৃহস্পতিবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট বিদ্যালয় সংস্কারসহ ৯ দফা দাবি জানান ছাত্ররা।
গত বুধবার মাইনুল হাসান মহাবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষ সুব্রত কুমার অধিকারীর পদত্যাগের দাবিতে কলেজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করে অধ্যক্ষ সুব্রত কুমার অধিকারী, সহকারী অধ্যাপক আবু তাহের মোহাম্মদ মামুন, প্রভাষক মোঃ আবু রাসেল হুদা এবং প্রভাষক এ কে এম গোলাম কিবরিয়াসহ ৪ জনের পদত্যাগের দাবি জানান। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ অধ্যক্ষ অবৈধভাবে নিয়োগ নিয়ে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িয়ে পরেছেন অধ্যক্ষসহ বাকী ৩ জনে সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন।
অধ্যক্ষ কলেজে অনুপস্থিত থাকায় উপাধ্যক্ষ দেবেন চন্দ্র রায় বিষয়টি কলেজ পরিচালনা পর্ষদকে অবগত করার আশ্বাস দেন এবং জরুরী ভিত্তিতে সমস্যা নিরসনের আশ্বস্ত করেন শিক্ষার্থীদের। শিক্ষার্থীরা হুশিয়ারী দিয়ে বলেন, জরুরী ভিত্তিতে অধ্যক্ষসহ ৪ জনের পদত্যাগ না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষনা করবেন বলেও জানান।
উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগ সরকার আমলে উপজেলার স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসাগুলোতে দলীয় নেতা-কর্মীদের সভাপতির দ্বায়িত্ব দিয়ে নিয়োগ বানিজ্য করাসহ অনিয়ম ও নানা দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। যে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে ওইসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকদের পদত্যাগ দাবির এ আন্দোলন।