ফজলুর রহমান মুক্তা-বাঘা (রাজশাহী) : রাজশাহীর বাঘায় শীত মৌসুমে আগাম আলু চাষ করে ভালো দামে বাম্পার ফলন পেয়েছেন আলু চাষিরা। গত মৌসুমে নতুন আলুর দাম ছিল খুচরা মুল্য ৪০ টাকা। কিন্তু এবার জমি থেকে কৃষকরা নতুন আলু পাইকারী মূল্যে ক্রয় করছেন ৪৫ টাকা। আর বাজারে খুচরা বিক্রী করছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা কেজি। তবে উপজেলা কৃষি অফিসার দাবি করেছেন, এ অঞ্চলে আলু তোলা কেবল শুরু হয়েছে। আমদানি বাড়লে আলুর দাম কমে আসবে।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, গত বছর আলুর ন্যায্য মূল্য পাওয়ায় এ বছর অনেকেই আলু চাষ করেছেন। এবার সকল পন্যের মুল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় নতুন আলুর দামও গত বারের চেয়ে বেশি পাওয়া যাচ্ছে। এর ফলে উপকৃত হচ্ছে কৃষক। তারা বলেন, এ অঞ্চলের আলু’র একটু ভিন্যতা রয়েছে। বিশেষ করে পদ্মার চরাঞ্চলের আলুর চাহিদা সব সময় বেশি। দুই সপ্তাহ পর এ অঞ্চলের আলু স্থানীয় চাহিদা পূরণের পাশা-পাশি আমদানি করা হবে রাজধানী ঢাকা-সহ দেশের অন্যান্য জেলায়।
উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর বাঘা উপজেলায় আলু চাষের লক্ষমাত্রা ছিল প্রায় চার হাজার হেক্টর। যা অতিক্রম করে চাষাবাদ হয়েছে প্রায় পাঁচ হাজার হেক্টর। এরমধ্যে অর্ধেক এর বেশি লক্ষ্ মাত্রা ধরা হয়েছে পদ্মার চরাঞ্চলে। সে মোতাবেক চরবাসীদের অনেকেই আগাম আলু চাষ করে আর্থিক ভাবে সাবলম্বী হচ্ছেন। তাঁদের দেয়া তথ্য মতে, অত্র চরাঞ্চলের আলুর গুনগত মান ভাল। এ কারনে এখান থেকে শীত মৌসুমে ট্রাক যোগে আলু চালান দেয়া হয় রাজধানী ঢাকা-সহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে।
বাঘার চরাঞ্চলের কৃষক গোলাম মোস্তফা জানান, তিনি এ বছর পাঁচ বিঘা জমিতে আগাম আলু চাষ করে আর্থিক ভাবে লাভবান হচ্ছেন। এর কারণ হিসাবে তিনি বলেন, এ বছর একদিকে যেমন আলুর বাজার ভাল অন্য দিকে ফলনও আশানুরুপ। অনুরুপ কথা বলেন, সমতল এলাকার বাউসা গ্রামের কৃষক আব্দুল ওহাব ও আড়ানী গ্রামের কৃষক মুক্তার আলী।
বাঘার চরাঞ্চলের চেয়ারম্যান বাবলু দেওয়ান বলেন, উপজেলার সীমান্তবর্তী দুর্গম পদ্মার চরাঞ্চলকে এক কথায় সবজি ভান্ডার বলা হয়। কারন এখানে এমন কোন সবজি নেই যা উৎপাদন হয়না। তার মতে, চরাঞ্চলে কাঁচা মরিজ ও পেঁয়াজ-রসুন থেকে শুরু করে আলু,বেগুন, টমেটো, গাজর, সিম, করলা, পুইসাক, লাও ,মিষ্টি কুমড়া, ও মুলা-সহ সকল প্রকার শাকসবজি উৎপাদন হয় এবং এ সমস্ত উৎপাদিত পন্য স্থানীয় চাহিদা পুরনের পাশা-পাশি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চালান দেয়া হয়।
বাঘার পাইকারি সবজি বিক্রেতা মানিক মিঞা ও জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, প্রতি বছর শীত মৌসুমে বাঘা সহ অত্র এলাকার বিভিন্ন হাটে সবজির দাম কমে যায়। কিন্তু এবার তুলনা মূলক ভাবে সকল সবজির দাম উর্ধগতি। তাদের দেয়া তথ্য মতে, রবিবার বাঘায় খুচরা মুল্য দেশী আলু (নতুন) ৫৫ থেকে ৬০ টাকা এবং পুরাতন আলু ২০ থেকে ২২ টাকায় বিক্রী হয়েছে । এর কারণ হিসাবে তারা বলেন, এবার পুরাতন আলুর আমদানী কম থাকায় নতুন আলুর দাম বেশী পাওয়া যাচ্ছে।
সার্বিক বিষয়ে বাঘা উপজেলা কৃষি অফিসার শফিউল্লাহ সুলতান জানান, বাঘার মাটি কৃষি আবাদের জন্য অত্যান্ত উপযোগী। বিশেষ করে এই উপজেলার চরাঞ্চলে সব ধরনের সবজির উৎপাদন ভালো হয়। এ দিক থেকে এবার সমতল এলাকাতেও অনেক সবজি উৎপাদন হয়েছে। তাঁর দেয়া তথ্য মতে, এবার শীত মৌসুমে লক্ষ মাত্রার চেয়ে অনেক বেশি পরিমান আলু চাষাবাদ হয়েছে উপজেলার দুর্গম পদ্মার চরাঞ্চলে। তিনি বলেন, এ অঞ্চলে কেবল আলু তোলা শুরু হয়েছে। আমদানি বাড়লে আলুর দাম কমে আসবে।
প্রধান উপদেষ্টা : ড. সরকার মো.আবুল কালাম আজাদ, সম্পাদক ও প্রকাশক : একরামুল হক বেলাল
ঢাকা অফিস- ২২, মা ভিলা ,পূর্ব তেজতুরী বাজার, ফার্মগেট-১২১৫। ইমেইল-spnews17@gmail.com, রেলওয়ে পার্ক,পার্বতীপুর,দিনাজপুর। ০১৭১২৩৭০৮০০
© 2023 Spnewsbd. All rights reserved.