মাহবুবুজ্জামান সেতু, মান্দা (নওগাঁ) প্রতিনিধিঃ নওগাঁর মান্দায় বিভিন্ন অনিয়ম, দূর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতা এবং ক্ষমতার অপব্যাবহারের জন্য পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন পরানপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান উজ্জল। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের তোপের মুখে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন তিনি। এ সময় চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান উজ্জলকে গ্রেপ্তারের দাবিতে অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন কয়েকশ জনতা। সংবাদ পেয়ে সেনাসদস্যরা সেখান থেকে চেয়ারম্যান উজ্জলকে উদ্ধার করে ইউএনওর কার্যালয়ে নিয়ে আসেন। পরে পরিবারের জিম্মায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক আব্দুস সামাদ বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ সংস্কার কাজের জন্য ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। চেয়ারম্যান উজ্জ্বল এক লাখ টাকায় শুধুমাত্র রঙের কাজ করে সমুদয় টাকা আত্মসাৎ করেন। এ ছাড়া এলজিএসপির বরাদ্দকৃত অর্থের কোনো কাজ না করে আত্মসাৎ করেন তিনি। সমন্বয়ক আব্দুস সামাদ আরও বলেন, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১৫ টাকা কেজির চাল চেয়ারম্যান উজ্জ্বল তার নিজস্ব লোকদের দিয়ে কিনে পরে বেশি দামে বাজারে বিক্রি করেন। এ ছাড়া টিসিবি ও ভিজিডির চাল বিতরণ ক্ষেত্রেও ব্যাপক অনিময় করেন চেয়ারম্যান উজ্জল।
জানা গেছে, এডিপি, টিআর ও কাবিখা প্রকল্পের অনুকূলে বরাদ্দকৃত অর্থও নয়ছয় করা হয়েছে। হোল্ডিং ট্যাক্স ও ট্রেড লাইসেন্স হতে প্রাপ্ত অর্থ ব্যাংকে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেন চেয়ারম্যান।
পরানপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নং ওয়ার্ডের সদস্য কামরুজ্জামান সরদার বলেন, ‘গোপালপুর হাটের উন্নয়নের জন্য ৮ লাখ টাকা ৮২ হাজার টাকা বরাদ্দ পাওয়া যায়। হাটের সিসি ক্যামেরা স্থাপন ও ড্রেন নির্মাণ প্রকল্পে আমাকে সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়। এ দু’টি প্রকল্পে বরাদ্দ ছিল ৪ লাখ টাকা। সিসি ক্যামেরা স্থাপনের কাজ সমাপ্ত হলেও ড্রেন নির্মাণ কাজটি এখন পর্যন্ত শুরু করা হয়নি। অথচ দু’টি প্রকল্পের বরাদ্দকৃত টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। অবশিষ্ট ৪ লাখ ৮২ হাজার টাকারও কোনো হদিস নেই।’
মান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লায়লা আঞ্জুমান বানু বলেন, চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান উজ্জ্বল পদত্যাগ পত্র দিয়েছেন। পরে সেনাসদস্যরা তাকে বাড়ি পৌঁছে দেন।