প্রিন্ট এর তারিখঃ নভেম্বর ২৪, ২০২৪, ১:১১ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ আগস্ট ২১, ২০২৪, ৩:১৪ অপরাহ্ণ
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি : সিরাজগঞ্জের বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম মহাসড়কের নলকা- কোনাবাড়ী সীমান্ত বাজার এলাকায় একটি আন্ডারপাস নির্মাণের দাবিতে ঢাকা- বগুড়া মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে শিক্ষক শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসী।
বুধবার (২১ আগস্ট) সকাল ১১টার দিকে কলেজ সংলগ্ন মহাসড়কে ঘন্টা ব্যাপী এ রাস্তা অবরোধ ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে। এ সময় মহাসড়কে প্রায় এক ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে। খবর পেয়ে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ ও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তাৎক্ষণিক ইউটার্ন নির্মানের প্রতিশ্রুতি দেন এবং আন্ডারপাস নির্মাণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি পৌঁছে দেওয়ার আশ্বাস দিলে বিক্ষোভকারীরা রাস্তা থেকে সরে যায়। অবরোধকারী ওএলাকাবাসী বলেন, কামারখন্দ- সদর উপজেলার মাহমুদপুর স্বল্প মাহমুদপুর খোপাকান্দি, নান্দিনা কামালিয়া, বরধুলের একাংশ, ধুকুড়িয়া, জামুয়া, মধ্য ভদ্রঘাট, পাইকোশা৷ জগৎগাঁতী গ্রামের প্রায় ১ লক্ষ মানুষ প্রতিনিয়ত রাস্তা পারাপার হতে হয়। প্রায় দুই হাজার ছাত্রছাত্রী ঝুকিঁপূর্ণ এই জায়গা দিয়ে রাস্তা পার হয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যায়।
এছাড়া দুপাড়ের কৃষকদের জমি প্রায় ৩শ থেক ৪শ বিঘা হওয়ায় আবাদ করার জন্য মৌসুমী ধান, পাট, ভুট্রাসহ নানান ফসল বহন করার জন্য গাড়ী বা হেঁটে পাড় করে নিতে হয়। এর আগে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে অনেকেই হতাহত হয়েছেন এনিয়ে আন্দোলনও করেছে কিন্তু কোন কাজ হয়নি। তারা বলেন, মহাসড়কের দক্ষিণপাশে কামারখন্দ হাসপাতাল, কামারখন্দ এলাকায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুল কলেজসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে যাতায়াত ও উত্তরপাশে সদর উপজেলার ধুকুড়িয়া আইডিয়াল কলেজ, ধুকুড়িয়া হাই স্কুল, কৃষি কলেজ, শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালসহ আশেপাশের অনেক প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত যাতায়াত করতে হয়। দীর্ঘদিন ধরে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে বারবার অবহিত করলেও কোন ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে না। তাই এদাবি পূরণ না হলে ৩দিন পর ফের মহাসড়ক অবরোধ করে রাখবেন বলে কঠোর হুশিয়ারী দেন অবরোধকারীরা। ধুকুড়িয়া আইডিয়াল কলেজের অধ্যক্ষ মীর মামুন হাসান রুবেল বলেন, একটি আন্ডারপাস আমাদের দীর্ঘদিনের চাওয়া।
রাস্তার দুপাশের হাজার হাজার ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক কৃষকসহ নানা পেশার মানুষের যাতায়াত করতে হয়। অনেকবার কর্তৃপক্ষকে অবহিত করলেও তারা কর্নপাত করেননি। আমরা এটা নিয়ে খুবই বিপদজনক অবস্থায় আছি। যেকোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। দুপাড়ের এলাকাবাসীর সুবিধার্থে এই দাবী পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলতেই থাকবে।অবরোধকারীদের আহ্বয়ক ফিরোজ বলেন, এটি কোন ব্যক্তি স্বার্থ নয়।
সর্বস্তরের মানুষের চাওয়া। রাস্তার দু এলাকার মানুষের যাতায়াতের সুবিধার্থে একটি আন্ডারপাস বা ওভারব্রীজ খুবই প্রয়োজন। দূর্ঘটনা এড়াতে এটি দ্রুত কার্যকরী করার জন্য আজকের এই সড়ক অবরোধ। স্কুল কলেজগামী ছাত্রছাত্রী শিক্ষক কৃষকসহ অন্যান্য পেশার মানুষ আজ উপস্থিত হয়েছে। অনিরাপদ ও ঝুঁকিপূর্ণভাবে আমরা আর রাস্তা পার হতে চাই না। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মীর কন্সট্রাকশনের প্রজেক্ট ম্যানেজার এখলাছ উদ্দিন বলেন, জানমাল রক্ষা, রাস্তা পারাপার ও যাতায়াতের সুবিধার্থে জনকল্যানে এ কাজ গুলো সরকার করে থাকে। আমরা কাজ পেয়ে যথাযথ ভাবে তা শেষ করি। তবে অবরোধকারীদের যৌক্তিক দাবী মনে করে তিনি বলেন, উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ নির্দেশ দিলে জনগনের সুবিধার্থে রাস্তা পারাপারের জন্য আমরা লেনগুলো ফাঁকা রাখতে পারি। পাশাপাশি কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে এক্ষুনি ইউটার্ন স্থায়ীভাবে করে দিতে পারি।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের উপ প্রকল্প ব্যবস্থাপক সাদ বলেন, ডিজাইনটি সর্বস্তরের মানুষের সমন্বয়ে করা হয়েছিল। এই জায়গা হয়তো কোন না কোনভাবেই মিস হইছে তবে করা উচিত ছিল। রাস্তার দুপাশে শিক্ষক, ছাত্রছাত্রী, কৃষকসহ অন্যান্যদের যাতায়াতের সুবিধার্থে আপাতত ইউটার্ন দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তবে আন্দোলনকারীদের দাবী একটি আন্ডারপাসের বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট পেশ করা হবে বলে তিনি আশ্বস্ত করেন।
এসময় শিক্ষক আনোয়ার হোসেন, সিরাজুল ইসলাম মুক্তি, মোতালেব, মুঞ্জুরুল আলম, কেএম ফেরদৌস, বিপ্লব দত্ত, বিপ্লব সাহা, রেজাউল, আবুল কালাম আজাদ, আব্দুস সালাম, শহিদুল, রিপন, আব্দুল আলিম, ইব্রাহিম, সুমন, আরিফ, নুরু ইসলাম, মোতালেবসহ দুপাড়ের সাধারণ মানুষ,বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দসহ কয়েক শতাধিক মানুষ উপস্থিত ছিল