কলিহাসান,দুর্গাপুর(নেত্রকোণা)প্রতিনিধি: নেত্রকোণার দুর্গাপুরে বন্যার পানিতে বাড়িঘর ভাসিয়ে নিয়ে যাওয়া প্রতিবন্ধী মর্জিনা খাতুনকে ঘর তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। সেনাবাহিনীর নিজস্ব অর্থায়নে তাকে নতুন একটি টিনের ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হয়। গত বৃহস্পতিবার সকালে ময়মনসিংহ ক্যান্টনমেন্টের মেজর মো. রিফাত উদ্দিন ভূঁইয়া মর্জিনাকে ঘরটি বুঝিয়ে দেন। পরে আশ্রয়হীন মর্জিনা স্বামী-সন্তান নিয়ে ঘরে ওঠেন। নতুন ঘর পেয়ে আনন্দ উপভোগ করেণ।
মেজর মো. রিফাত উদ্দিন ভূঁইয়া প্রতিবেদককে বলেন, জিওসি ১৯ পদাতিক ডিভিশন এবং ঘাটাইলের এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল নকীব আহমেদের উদ্যোগে সেনাবাহিনীর নিজস্ব অর্থায়নে নেত্রকোনায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ৫০টি অসহায় গৃহহীন ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারকে ঘর তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে মর্জিনাকে নিয়ে গত ৫ জুলাই বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে ‘ঈদ যেন দুঃস্বপ্ন ওদের’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত প্রতিবেদনটি নজরে এলে তাকে ঘর তৈরি করে দেওয়া হয়।
মর্জিনার আক্তার(৩৪) বাড়ি দুর্গাপুর উপজেলার গাঁওকান্দিয়া গ্রামে। তার স্বামী আজিজুল ইসলাম (৩৮) পেশায় দিনমুজুর। তাদের দুই ছেলের মধ্যে বড় ছেলে মুসলিম(৭) পাশের গ্রামে কালীকাবর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণিতে পড়ে। আর ছোট ছেলে মোরসালিনের বয়স দুই বছর।
স্থানীয় বাসিন্দা ও উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টি দুর্গাপুরের সোমেশ্বরী নদী উপচে গত ১৭ জুন সকালে বন্যার পানির স্রোতে মর্জিনার বসতভিটায় হানা দেয়। কয়েক মিনিটের ব্যবধানে মর্জিনাসহ বেশ কয়েকজনের ঘরবাড়ি বানের জলে ভাসিয়ে নিয়ে যায়।
এরপর থেকে মর্জিনা ও আজিজুল দম্পতি গাছের নিচে ত্রিপল টানিয়ে বসবাস করেণ। পরে ঘাটাইল ক্যান্টনমেন্টের নির্দেশে মর্জিনাকে একটি নতুন ঘর বানিয়ে দেওয়া হয়।
মর্জিনার স্বামী আজিজুল জানান, মানুষের বাড়িতে দুজন মিলে কাজ করে কিছু টাকা জমিয়ে ও ঋণ করে করোনার শুরুতে একটি টিনের চালা ঘর বানিয়েছিলেন। কিন্তু বন্যার পানি তাদের ঘরবাড়ি ভেঙে চুরমার করে নিয়ে গেছে। কোনো জিনিসপত্র রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। সন্তানদের নিয়ে শুধু প্রাণে বেঁচেছেন তারা। স্থানীয় একটি পাঞ্জেখানায় প্রায় ১০দিন থেকেছিলেন।
আজিজুল ইসলাম বলেন, প্রায় চার মাস ত্রিপল টাঙিয়ে কষ্ট করে থাকছি। অহন সেনাবাহিনী একটা নতুন টিনের ঘর বানাইয়া দিছে। ঘুমানোর জন্য ইউনিয়নের মেম্বার ইসমাইল হোসেন একটা চৌকি কিনে দিছে। পোলাপান নিয়া এতদিন খুবই কষ্ট করছিলাম। যারা আমদের সাহায্য করছেন, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।
মর্জিনার প্রতিবেশী বন্যায় ঘরবাড়ি হরানো রহিত হাসান বলেন, মাত্র এক ঘণ্টায় ¯্রােতের পানিতে এলাকার শতাধিক ঘরবাড়ি জিনিসপত্র ভাসাইয়া নিয়া গেছে। আমার বাড়িটি এখন পুকুর। অন্যের বাড়িতে আশ্রয় থাকি। সরকারিভাবে এখনো পর্যন্ত কোনো পরিবার সহযোগিতা পায়নি। অসহায় প্রতিবন্ধী মর্জিনাকে সেনাবাহিনী একটি ঘর দেওয়ায় আমরা খুশি।
এ ব্যাপারে দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী র্কর্মতা (ইউএনও) রাজীব উল আহসান বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে ছয় শতাধিক ক্ষতিগ্রস্তের তালিকা করা হয়েছে। আমরা এ পর্যন্ত ২০০ জনকে ২ বান্ডিল করে ঢেউটিন ও নগদ ৬ হাজার করে টাকা বিতরণ করেছি। নতুন বরাদ্দ পেলে গাঁওকান্দিয়ায় তা বিতরণ করা হবে।
প্রধান উপদেষ্টা : ড. সরকার মো.আবুল কালাম আজাদ, সম্পাদক ও প্রকাশক : একরামুল হক বেলাল
ঢাকা অফিস- ২২, মা ভিলা ,পূর্ব তেজতুরী বাজার, ফার্মগেট-১২১৫। ইমেইল-spnews17@gmail.com, রেলওয়ে পার্ক,পার্বতীপুর,দিনাজপুর। ০১৭১২৩৭০৮০০
© 2023 Spnewsbd. All rights reserved.