রবিবার, ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

চেকপোস্টে প্রেমিক প্রেমিকার জয়! স্ত্রীকে ভারতে নিচ্ছিলো শ্বশুড়বাড়ির!ঢাল হয়ে দাঁড়ালেন স্বামী

চেকপোস্টে প্রেমিক প্রেমিকার জয়! স্ত্রীকে ভারতে নিচ্ছিলো শ্বশুড়বাড়ির!ঢাল হয়ে দাঁড়ালেন স্বামী

২৩ Views

তেঁতুলিয়া(পঞ্চগড়) প্রতিনিধি: দেশের সর্ব উত্তরে বাংলাবান্ধায় প্রেমিক প্রেমিকা জয়। ঘুরতে গিয়ে একে অপরের দেখা। পরে ফোন নম্বর নিয়ে হয় কথা ও পরিচয়। কথা বলার এক পর্যায়ে গড়ে উঠে বন্ধুত্ব, অতপর দু’জনের মধ্যে গড়ে উঠে ভালবাসার সম্পর্ক। দীর্ঘ ৯ মাসের ভালোবাসা গড়ায় বিয়ের সম্পর্ক পর্যন্ত। তরুনী তনুশ্রী দাস ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলামী শরিয়তের বিবাহ করেন প্রেমিক কবির হোসেনকে। দুজনে কয়েক দিন সংসার করলেও তবে বিয়ে মানতে নারাজ তরুনীর বাবা মা। মেয়েকে মুসলিম ছেলের সাথে বিয়ে না দিতে ভারতে নিয়ে যাচ্ছিলো।
এদিকে রোববার দুপুরে তরুণীর বাবা-মা তাদের মেয়েকে বাংলাবান্ধা ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের কার্যক্রম শেষ করে বিজিবি চেকপোস্টে গেলে সে সময় বাধা হয়ে দাঁড়ান কবির হোসেন। পরে সে তাদের বিয়ের যাবতীয় ডকুমেন্টস দেখান। তারা দুজনক একে অপরকে ভালোবেসে বিয়ে করেছেন এমন জবানবন্দি দেন। সেই তার স্বামীর সাথে সংসার করবেন এমন স্বীকারোক্তিও দেন। তরুণীর বাবা মায়ের সামনে বিজিবি কবিরের কাছে তার স্ত্রীকে তুলে দেন।
জানা গেছে, রংপুর কারমাইকেল কলেজ মাঠে রংপুর জেলা শহরের দর্শনা এলাকার কবির হোসনের সাথে হঠাৎ পরিচয় হয় ঠাকুরগাঁও জেলার চন্ডিপুর এলাকার তরুনী তনুশ্রী দাসের। পরে ৯ মাস প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠার পর গত বছরের ৫ জুন পরিবারের অমতে হিন্দু ধর্ম থেকে মুসলমান হয়ে ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক বিয়ে করেন কবির হোসেনকে। ধর্মান্তরিত হয়ে নাম পরিবর্তন করে নাম রাখেন সিদ্রাতুল মুনতাহা। কয়েক দিন সংসারও করেন তারা। তবে বিয়ের কয়েক দিন পরই জানতে পারেন তরুনীর পরিবার। হিন্দু হয়ে মুসলমান ছেলের সাথে বিয়ে হওয়ায় সেই বিয়ে মেনে নেননি তারা।
এ বিষয়ে কবির হোসেন বলেন, আমরা ভালোবেসে একে অপরকে বিয়ে করেছিলাম। কয়েকদিন সংসারও করেছি। কিন্তু হঠাৎ একদিন আমার স্ত্রীর বাড়ির লোকজন আমাদের তুলে ঠাকুরগাঁয়ে নিয়ে রাখে। পরে আমার স্ত্রীকে আটকে রেখে আমাকে ধর্ষণ ও অপহরণের মামলা দেয় । আমি একদিন জেলও খেটেছি। তুমি আমার স্ত্রীর জবানবন্দীতে মুক্তি ও পাই। তবে এতদিন আমার স্ত্রীকে আমার শ্বশুর বাড়ির লোকজন আটকে রেখেছিল। আমি তার সাথে যোগাযোগ করতে পারিনি। তবে গতকাল যখন শুনলাম আমার স্ত্রীকে তার অমতে ভারতে তার আত্বীয় বাসায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তখন আমি সেনাবাহিনী, পুলিশ বিজিবি ও ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করি । ইমিগ্রেশন করার পর তারা যখন বিজিবির চেকপোষ্টে যায় তখন আমি অভিযোগ করি। এবং আমাদের বিয়ের যাবতীয কাগজপত্র উপস্থাপন করি। আমার স্ত্রী ভারতের না যেতে অনিহাপ্রকাশ করেন এবং আমার সাথে সংসার করতে চান্ পরে বিজিবি সদস্যদের সহযোগিতা আমি আমার স্ত্রীকে ফিরে পাই। সবার কাছে দোয়া চাই আমরা যেন সুখে শান্তিতে সংসার করতে পারি।
এদিকে দীর্ঘদিন পর ওই তরুণী ও তার স্বামী কবির হোসেন একখানা হতে পেরে ধন্যবাদ জানান বিজিবিসহ সংশ্লিষ্ট কে। এ সময় তারা দেশবাসীর কাছে দোয়া ও চেয়েছেন। পরে বিকেলে মাইক্রোবাসে বাসে করে স্বামী কবির হোসেন তার স্ত্রীকে তার বাড়ি রংপুরে নিয়ে যান।
এদিকে কবিরের সাথে আসা প্রতিবেশী মারুফ হাসান বলেন, তারা দুজন ভালবেসে ঘর বেঁধেছিল। কিন্তু কবির মুসলমান ও তার স্ত্রী হিন্দু হওয়ায় শ্বশুর বাড়ির লোকজন মেনে নিচ্ছিলো না। কবিরের নামে মিথ্যা মামলার দায়ের করে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন। আজকে ভারতে কবিরের স্ত্রীকে নিয়েয যাচ্ছিল তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন। পরে কবির এসে তাদের বিয়ের কাগজপত্র দেখলে বিজিবি সহযোগিতায় তার স্ত্রীকে ফিরে পায় কবির। তার স্ত্রী ও কবিরের সাথে সংসার করতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। জীবনে অনেক ভালোবাসা দেখেছি কিন্তু এদের মতো ভালোবাসা দেখিনি। কবিরা স্ত্রী শুরু থেকে কবিরকে কাছে পেতে আগ্রহ প্রকাশ করেন।

Share This

COMMENTS