সবুজ হুসাইন, নওগাঁ:
কোরবানির পশুর চামড়ার ন্যায্য দাম পাওয়া থেকে এ বছরও বঞ্চিত নওগাঁর মানুষ। সিন্ডিকেটের কারণে প্রতি বছর গরিব মিসকিনরা যেমন তাদের হক থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। নওগাঁয় চামড়া ব্যবসায় একটি সিন্ডিকেটের আধিপত্যের কারণে মৌসুমী ব্যবসায়ীরা চরম বিপাকে পড়েছেন। প্রতি বছর কোরবানির ঈদের পর মৌসুমী ব্যবসায়ীরা স্থানীয়ভাবে চামড়া সংগ্রহ করে বিক্রির মাধ্যমে লাভবান হওয়ার চেষ্টা করেন। তবে এবার অভিযোগ উঠেছে, একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট স্থানীয় বাজার নিয়ন্ত্রণ করে চামড়ার দাম ইচ্ছেমতো নির্ধারণ করছে, ফলে মৌসুমী ব্যবসায়ীরা ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তাই এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে সরকারের এগিয়ে আসার প্রয়োজন বলে মনে করেন মৌসুমী ব্যবসায়ীরা।
শরিফুল ইসলাম মাসুম নামে এক মৌসুমী ব্যবসায়ী আক্ষেপ করে বলেন, আমরা গ্রাম থেকে সরকার নির্ধারিত মূল্যের থেকে একটু কম রেখে চামড়া ক্রয় করে তা বাজারে নিয়ে এসেছি কিন্তু সিন্ডিকেটের আধিপত্যের কারণে আমরা এখন বিপাকে পড়েছি। যে চামড়া ৯০০-১০০০ টাকায় ক্রয় করে এনেছি এখানে তা ৭০০-৮০০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। চামড়া পচনশীল হওয়ায় লোকশান হলেও বাধ্য হয়ে বিক্রি করতে হচ্ছে। সরকারিভাবে মনিটরিং বা ভালো কোন চামড়া সংরক্ষণের বিষয়ে নওগাঁয় ভালো উদ্যেগ গ্রহণ করলে এই সিন্ডিকেট থেকে আমরা রক্ষা পাবো এবং নায্য মূল্যে বাজারে বিক্রি করতে পারবো।
আরেক মৌসুমী ব্যবসায়ী বলেন, নওগাঁয় চামড়া ব্যবসার সিন্ডিকেট ভাঙতে হলে আমাদের ব্যবসায়ীক সমিতির কমিটির নির্বাচন দিতে হবে। ২০ বছর থেকে একজন ব্যক্তিই সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন কোন নির্বাচন দিচ্ছেন না। তার বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। তিনি চামড়া গুদাম অবৈধভাবে দখল করে রেখেছেন।
আমিনুল ইসলাম নামে এক মাদ্রাসা শিক্ষক বলেন, আমি আমার মাদ্রাসার চামড়াগুলো নিয়ে চামড়া ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলীর কাছে এসেছি প্রায় দুই ঘন্টা তালবাহানা করার পর তিনি ১৬ টি এ্যড়া গরুর চামড়া ৮৫০টাকা দরে এবং ১৬ টি গাই গরুর চামড়া ৩৫০টাকা দড়ে নিয়েছেন আরো কিছু চামড়া ছিল সেগুলো ১৫০টাকা করে দাম দিতে চান এবং ভেড়া ও ছাগলের চামড়া ১০-২০ টাকা করে হলে নিবে বলেন। চামড়ার তৈরি জিনিসের অনেক মূল্য কিন্তু চামড়ার মূল্য নেই কেন? সরকার একটা মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছেন কিন্তু তা মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না কেন? প্রশাসনের মাঠ পর্যায়ে নজরদাড়ি করা দরকার।
নওগাঁর চামড়া বাজারে মৌসুমী ব্যবসায়ীদের অভিযোগের বিপরীতে চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী দাবি করেছেন, "আমরা কোনো সিন্ডিকেট করছি না, বরং চামড়ার গুণগত মান অনুযায়ী বিভিন্ন দামে মাল ক্রয় করছি।"
তবে সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। বাজারে একধরনের একচেটিয়া মূল্য নির্ধারণ এবং ব্যবসায়ীদের চামড়া বিক্রি করতে বাধ্য করার অভিযোগ রয়েছে। মৌসুমী ব্যবসায়ীরা বলছেন, তারা গুণগত মান অনুযায়ী নয়, বরং সিন্ডিকেট নির্ধারিত দামে চামড়া বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন, অন্যথায় মাল নেওয়া থেকে বিরত থাকছে বড় ক্রেতারা আর চামড়া প্রক্রিয়াজাত করে রাখার মতো পরিবেশ নেইও ছোট ছোট ব্যবসায়ীদের এই সুযোগ গ্রহণ করছে সিন্ডিকেট।
চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতির সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, মৌসুমী ব্যবসায়ীদের অভিযোগের বিষয়টি শুনে তা স্বীকার করে বলেন হু হু এবং এরপর তিনি মুঠোফোনে আরো বলেন, আপনার বাসাওতো নওগাঁতেই আপনিও কিছু টাকা পয়সা দেন সিন্ডিকেটের সাথে জড়িত হোন লাভ যা হবে সবাই মিলেই ভাগ করে নেওয়া হবে।
এ অবস্থায় বাজারে প্রকৃত প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ গড়ে তোলার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত হস্তক্ষেপ না হলে এই সমস্যা আরও ঘনীভূত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এ বিষয়ে নওগাঁ সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার ইবনুল আবেদীন বলেন, ইতিমধ্যেই আমরা মনিটরিং করছি আর এসব দুই একটি অভিযোগ আসতেছে তা আমরা খতিয়ে দেখব যদি এমন প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রধান উপদেষ্টা : ড. সরকার মো.আবুল কালাম আজাদ,
সম্পাদক ও প্রকাশক : একরামুল হক বেলাল,
নির্বাহী সম্পাদকঃ জিকরুল হক
ঢাকা অফিস- ২২, মা ভিলা ,পূর্ব তেজতুরী বাজার, ফার্মগেট-১২১৫। ইমেইল-spnews17@gmail.com ০১৩১৪১৪৬৬৬২ রেলওয়ে পার্ক,পার্বতীপুর,দিনাজপুর। ০১৭১২৩৭০৮০০
Copyright © 2025 Spnewsbd. All rights reserved.