সিরাজগঞ্জ অর্থনৈতিক অঞ্চল লিমিটেডের (এসইজেডএল) পরিচালক শেখ মনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমাদের ইকোনমিক জোনের প্রজেক্ট অফিস চালুর পাশাপাশি কারখানা ব্লক ও রাস্তা চিহ্নিত করে মাটি ভরাটের কাজ প্রায় ৮৫ শতাংশ শেষ। ফেইজ-১ ও ফেইজ-২ এরিয়ার মাঝে একটি সেতু তৈরিও শেষ হয়েছে। শুরু হয়েছে কারখানার ব্লক চিহ্নিত করে উদ্যোক্তাদের প্লট বুঝিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া। মোট জমির ৬০ শতাংশ জায়গায় কারখানা তৈরির জন্য ৪০০ মতো প্লট করা হচ্ছে। বাকি জমিতে পার্ক, বনায়ন, পর্যটন সুবিধা, হাসপাতাল, আইসিটি জোন, হাটবাজার, পুকুর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি গড়ে তোলা হবে। শ্রমিকদের জন্য থাকবে অত্যাধুনিক ডরমেটরি। আমরা আশা করছি, ২০২৫ সালেই এখানে প্রথম শিল্প প্রতিষ্ঠান উৎপাদনে যাবে। আমাদের লক্ষ্য ২০৩০ সাল নাগাদ এখানে সব মিলিয়ে ৫ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি করা। ব্যক্তি মালিকানাধীন ১১টি কোম্পানির যৌথ উদ্যোগে গড়ে উঠা এই ইকোনোমিক জোনে প্রায় ৪০০টির মতো প্লট তৈরি হচ্ছে। প্রকল্পের মাস্টার প্লান ও সম্ভাব্যতা যাচাই করেছে প্রাইস ওয়াটার হাউস কুপারস (পিডব্লিউসি) এবং ডিটেইল ইঞ্জিনিয়ারিং প্ল্যান করছে জাপান ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউট (জেডিআই)। গ্যাস, বিদ্যুৎ ও অবকাঠামোগত সুবিধার পাশাপাশি জল, স্থল এবং রেলপথে উৎপাদিত পণ্য সরবরাহের সুবিধা থাকবে এই অর্থনৈতিক অঞ্চলে। মনোয়ার হোসেন আরও বলেন, ইকোনোমিক জোনকে ঘিরে নদীবন্দর হচ্ছে, রেলওয়ের ইনল্যান্ড কন্টেইনার ডিপো (আইসিডি) কাজ প্রায় শেষ, ট্রেন লাইন আছে, যমুনার ওপর আলাদা রেল সেতু হয়েছে (উদ্বোধনের অপেক্ষায় আছে), ফোর লেনের রাস্তাসহ অনেকগুলো ফ্লাইওভার হয়েছে। এছাড়া এখানে যমুনা নদীর মিষ্টি পানি আছে। যমুনা নদীর পানি ওয়াটার ট্রিপমেন্ট প্ল্যান্টে নিয়ে যাওয়া হবে, সেখান থেকে ফ্যাক্টরিতে সাপ্লাই দেওয়া হবে। কারখানায় গ্যাস সরবরাহ নিয়েও প্রস্তুতিমূলক কাজ চলছে।
সিরাজগঞ্জ অর্থনৈতিক অঞ্চলে অনেক বড় নামি দামি কোম্পানি জমি বরাদ্দ পেয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে, অ্যাপেক্স ফুটওয়্যার, কন্টিনেন্টাল গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রিজ, ডায়নামিক ড্রেজিং, নিট এশিয়া, এমকে কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ, রাতুল ফ্যাব্রিক, অ্যাকটিভ কম্পোজিট মিলস, রাইজিং হোল্ডিংস, রাইজিং স্পিনিং মিলস, মেরিনা প্রপার্টিজ, টেক্সট টাউন, স্কয়ার এক্সেসরিজ এবং স্কয়ার ইলেকট্রনিক্স।
শেখ মনোয়ার হোসেন আরও বলেন, সিরাজগঞ্জ ইকোনমিক জোন রপ্তানিমুখী উদ্যোক্তাদের সব ধরণের সুবিধা নিয়েই তৈরি হয়েছে। ১০ বছরের আয়কর রেয়াত সুবিধা, শুল্কমুক্ত সুবিধা, কাষ্টমস বন্ডেড এলাকা হিসেবে ঘোষিত। এছাড়া সামনের দিনগুলোতে শিল্পকারখানার জন্য যেখানে সেখানে জমি পাওয়া অনেক কঠিন হয়ে যাচ্ছে বিধায় ইকোনোমিক জোনে পরিবেশগত ও অবকাঠামো সুবিধার কারণে উদ্যোক্তারা বেশ আগ্রহ দেখাচ্ছেন। শুরুর দিকে চ্যালেঞ্জিং কাজ জমি অধিগ্রহণ ও ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিকদের ক্ষতিপূরণ প্রদান করার পাশাপাশি নানা প্রশাসনিক জটিলতা কাটিয়ে ইকোনোমিক জোনের বর্তমান অগ্রগতি এখন সন্তোষজনক।