সঞ্জয় ব্যানার্জী, পটুয়াখালী প্রতিনিধি :; পাঁচ বছরের প্রেমের পর প্রেমিকার টানে শ্রীলঙ্কা থেকে বাংলাদেশে চলে এসে বিয়ে করেছিলেন দিলশান মাদুরাঙ্গা নামের যুবক। পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের মধ্য গছানী গ্রামে গত নভেম্বরে ছুটে এসেছেন দিলশান মাদুরাঙ্গা (৩০) বিবাহ করেন সুবর্ণা আক্তারকে। বর্তমানে তারা সুখেই আছেন বলে জানালেন সুবর্ণা আক্তার। তবে দিলশানের বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পেতে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) কার্ডের অপেক্ষায় রয়েছেন এই দম্পতির ভবিষ্যৎ বসবাস এবং নতুন প্রজন্মের সুচনা হাস্যোজ্জ্বল মুখেই এমন কথা বললেন সুবর্ণা আক্তার। সুবর্ণার দাবী তার স্বামী দিলশানের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) কার্ড।
এর আগে গত বছর ২০২৪ সালের ৭ নভেম্বর বৃহস্পতিবার দিলশান মাদুরাঙ্গা পটুয়াখালী পাবলিক নোটারির মাধ্যমে ইসলাম ধর্ম গ্রহন করেন। ওই দিন রাতে সামাজিক রীতিতে বাংলাদেশী তরুণী সুবর্ণা আক্তারের সাথে ইসলামী শরা-শরিয়াত মোতাবেক বিবাহ সম্পন্ন হয়।
সুবর্ণা আক্তার জানান, তিনি ভাল আছেন। এখন দিলশানের নাগরিক্ত নিয়ে সমস্যায় আছি। যদি এনআইডি করা যেতো তাহলেই আমরা সুখি থাকবোন এবং খুশি। সরকারের কাছে তিনি তার স্বামীর এনআইডি কার্ডটির দাবী করেন। সুবর্ণা আরও বলেন, আমাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বেশ মিল রয়েছে। দিলশান এসে বিবাহের পর একমাসেরও বেশী সময় ছিলেন বাংলাদেশে। সাথে করে আমাকে নিয়ে গেছেন তার দেশ শ্রীলঙ্কায়। আমিও ওখানে প্রায় একমাসের বেশি ছিলাম। ওরা বেশ ভাল মানুষ। ওদের পাকা বাড়ী রয়েছে। আমার শশুর-শাশুড়িও খুবই ভাল মনের মানুষ। আমাকে মেয়ের মত ভালবাসেন তারা। আমার একটি দেবর ও একটি ননদ আছে। ননদের বিবাহ দিয়েছেন। দিলশান বর্তমানে ওখানে তার বাবার সাথে তার ব্যবসা দেখাশুনা করেন। ওখানে বিবাহের পর ছেলেরা বেশীর ভাগই আলাদা সংসার শুরু করেন। এতে বাবা-মায়ের কোন আপত্তি থাকেনা। তাই দিলশান কোথায় থাকবে তা দিলশানের ইচ্ছা। তাতে তার বাবা মায়ের কোন আপত্তি নেই। তাই দিলশানের ইচ্ছা এনআইডি কার্ড পেলেই তিনি বাংলাদেশে বসবাস করবেন এবং ব্যবসা শুরু করবেন। আমরা সুখে থাকব। তার পর ভবিষ্যৎ প্রজন্ম নেয়ার চিন্তা করছি বলেন সুবর্ণা। তিনি আরও জানান, দিলশান আমার খরচের টাকা ব্যাংকে এবং অনলাইনে পাঠান। খুব শীঘ্রই বাংলাদেশে আমার কাছে আসবেন দিলশান বলেন সুবর্ণা।
দশমিনা উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের মধ্য গছানী গ্রামের নিজাম উদ্দিন সিকদারের চার মেয়ের মধ্যে বড় মেয়ে সুবর্ণা আক্তার (২৫) পাঁচ বছর আগে জর্ডানে যান কাজের সন্ধানে। সেখানে গিয়ে একটি পোশাক কারখানায় কাজ পান তিনি। একই পোশাক কারখানায় কাজের সুবাধে শ্রীলঙ্কার কুরুনাগাল জেলার দুমমলচুরিয়া থানার ন্যাবটাকা উডুবাগদা গ্রামের লাকমালের দুই ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে বড় ছেলে দিলশান মাদুরাঙ্গার সাথে তার পরিচয় হয়। দিলশান মাদুরাঙ্গা ওই পোশাক কারখানায় সুপারভাইজার হিসেবে কাজ করতেন। পরিচয়ের পর দীর্ঘ পাঁচ বছর তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক চলে। এক মাস আগে সুবর্ণা গ্রামের বাড়ি চলে আসে। দেশে ফিরলেও দিলশান মাদুরাঙ্গার সাথে তার যোগাযোগ চলছিল। গ্রামে ফিরে সুবর্ণা বিষয়টি তার পরিবারকে জানান এবং তার পরিবার রাজি হলে তিনি দিলশান মাদুরাঙ্গাকে বাংলাদেশে আসতে বলেন। পরে ৬ নভেম্বর দিলশান মাদুরাঙ্গা দশমিনায় পৌছান। ৭ নভেম্বর দিলশান মাদুরাঙ্গা মুসলিম ধর্ম গ্রহণ করেন। তার বর্তমান দিলশান ইসলাম। একই দিন বৃহস্পতিবার সুবর্ণা ও দিলশান ইসলামের বিয়ে হয়। রাতে সুবর্ণার গ্রামের বাড়িতে সামাজিক রীতি মেনে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। তখন বিষয়টি নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছিল।
দিলশান ইসলাম তখন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, আমরা একই কারখানায় চাকুরী করতাম। সম্পর্কের বিষয়টি নিজের পরিবার জানতেন। পরিবারের সম্মতি নিয়েই বাংলাদেশে বিয়ে করতে এসেছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে এসে তার ভালো লাগছে। কিছু দিন এখানে তিনি থাকবেন। বাংলাদেশের পরিবেশ, সামাজিক রীতিনীতি আমার খুব ভাল লাগে। এখানের মানুষের আতীথেয়তা আমাকে মুদ্ধ করেছে। বাংলাদেশের মানুষ অনেক ভালো।
সুবর্নার বাবা মো. নিজাম উদ্দিন সিকদার বলেন, আমার মেয়ের সুখেই আমার সুখ। ওরা দু’জন দুজনকে নিজেদের ইচ্ছায় বিয়ে করেছে। এখন শুধু একটাই দাবী সরকারের কাছে আমার মেয়ে জামাতার নাগরিকত্ব। তার পর বসবাস শুরু করবেন এখানে। এর পর নাতি-নাতনির মুখ দেখবো। আপনারা সকলে ওদের জন্য দোয়া করবেন। ওরা যেন সুখী হয়।###
প্রধান উপদেষ্টা : ড. সরকার মো.আবুল কালাম আজাদ,
সম্পাদক ও প্রকাশক : একরামুল হক বেলাল,
নির্বাহী সম্পাদকঃ জিকরুল হক
ঢাকা অফিস- ২২, মা ভিলা ,পূর্ব তেজতুরী বাজার, ফার্মগেট-১২১৫। ইমেইল-spnews17@gmail.com ০১৩১৪১৪৬৬৬২ রেলওয়ে পার্ক,পার্বতীপুর,দিনাজপুর। ০১৭১২৩৭০৮০০
Copyright © 2025 Spnewsbd. All rights reserved.