আমার ক্লাসের ফার্স্ট গার্ল বান্ধবী ১ লাখ স্যালারির চাকরি পেয়ে যায়, বিয়ে হবার পর স্বামীকে পাত্তা দেয় না।
কারণ তার আরেক কলিগের সঙ্গে পরকীয়া চলছিল, সেই কলিগও লাখ টাকা বেতন পায়।
তারা বিয়ে করবে ভাবছে।
এর মধ্যে একটা মেয়ে বাচ্চা হয়েছে। তাতে কী, মায়ের বুদ্ধিতে স্বামীকে ডিভোর্স দেয়।
কিছুদিন পর সেই প্রেমিক কলিগ বিদেশ চলে যায়, এতদিন আসলে সে প্রেমের নামে পরকীয়া করেছে।
বান্ধবী এখন বাবার বাড়িতে থাকেন।
২ বছর যাবার পর সে বুঝতে পারে পারিবারে তার গুরুত্ব স্যালারির সমান, একটা সময় চরম একাকিত্ব বোধ করে এবং আবার বিয়ের কথা বলে।
কিন্তু ৩ বছরের বাচ্চাসহ কেউ বিয়ে করতে রাজি হয় না, যারা রাজি হয় তারা লোয়ার ক্লাস। যা তার সঙ্গে যায় না।
পরে ২ বছরেও একটা পাত্র জোগাড় হয়নি, বান্ধবী তখন হাড়ে হাড়ে টের পায় বাস্তবতা কত কঠিন।
এদিকে করোনায় কোম্পানির ব্যবসা খারাপ, বেশি বেতনের অনেক কর্মী ছাঁটাই হলো। আমার বান্ধবীও তার মধ্যে। চাকরি যাওয়ার মাত্র ২ মাসের মধ্যেই বান্ধবী ও তার মেয়ে বাবার পরিবারে বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
একটা পর্যায়ে পরিবার অতিষ্ঠ হয়ে যায়, ২ ভাই বিয়ে করেছে। ভাইদের বৌরা ননদ ও তার মেয়েকে সংসার ছাড়তে বলছে।
তখন বান্ধবী বুঝতে পারে নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছে ভেবে নিজের পায়েই কুড়াল মেরেছে। এখন তার সন্তান বাবাহীন অবস্থায় বড় হচ্ছে। টাকা দিয়ে কী হবে।
যে পুরুষকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে ডিভোর্স দিলো ঐ ছেলে ৩ মাসের মাথায় ঠিকই একটা অবিবাহিত মেয়ে বিয়ে করে নেয়।
বেতন কম হলেও সেই মেয়ে সুখে শান্তিতে সংসার করছে।
নিরুপায় বান্ধবী আবার আগের স্বামীর অফিসে গিয়ে সংসার করবে বলে জানায়।
কিন্তু তিনি বেকার স্ত্রী নিয়ে নতুন সংসারে সুখে আছেন বলে উত্তর দেন। ইচ্ছা করলে মেয়েটিকে দিতে পারেন বলে জানান।
বাধ্য হয়ে তাই করেন আমার বান্ধবী।
কিন্তু নিজে কী করবেন, কী খাবেন?
এর মধ্যে কোভিড চলে গেছে। পুরনো অফিসে যোগাযোগ করলেন, সেখানে চাকরির সুযোগ নেই, কিন্তু অফিসের সাথে একটা লন্ড্রির দোকান আছে, তার সাবেক বস তাকে সেই দোকানটি লিজ দেয়ার ব্যবস্থা করেন।
আমার যে বান্ধবী পুরুষের ওপর পৌরুষত্ব দেখাতে চেয়েছিলেন, সে এখন দিন রাত শত পুরুষের প্যান্ট পাজামা, ধৌত করেন।
উপার্জন করা নারীরা স্বামীকে ছোট করে দেখার পরিণতি কত নির্মম তার আমার বান্ধবীতে দিয়ে দেখা যায়।
সংগৃহীত ( লেখা ও ছবি )