শনিবার, ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বাংলাদেশকে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস মার্কিন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর

বাংলাদেশকে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস মার্কিন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর

৮৮ Views
ইমা এলিস/বাংলা প্রেস, নিউ ইয়র্ক: বাংলাদেশের সঙ্গে পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট দীর্ঘদিনের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক বিষয়ে সহযোগিতা আরও গভীর করতে আগ্রহী যুক্তরাষ্ট্র। ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রশংসা করে বাংলাদেশকে সব ধরনের সহযোগিতাও দেবে দেশটি।
নিউ ইয়র্কের স্থানীয় সময় আজ বৃহস্পতিবার ( ২৬ সেপ্টেম্বর) সকালে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দেখা করেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। এ সময় ব্লিঙ্কেন বাংলাদেশকে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে এ  কথা জানানো হয়েছে।
কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, জাতিসংঘ সদর দপ্তরের নির্ধারিত সভাস্থলে আজ সকালে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্রায় আধা ঘণ্টার বৈঠকে বাংলাদেশে কোন প্রেক্ষাপটে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়েছে সেই পরিস্থিতি তুলে ধরার পাশাপাশি বাংলাদেশের সংস্কার প্রক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা কামনা করেন ড. ইউনূস
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক্স হ্যান্ডলে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার বিষয়ে ড. ইউনূসের সঙ্গে অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। বিশেষ করে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট দীর্ঘদিনের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক বিষয়ে সহযোগিতা আরও গভীরতর করার প্রসঙ্গটি আলোচনায় এসেছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে ড. ইউনূসের নেতৃত্বের প্রশংসা করেছেন।
প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে বলা হয়েছে, ড. ইউনূসের সঙ্গে ব্লিঙ্কেনের বৈঠকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানানোর পাশাপাশি অর্থনৈতিক সহযোগিতা, রোহিঙ্গা সংকট, সন্ত্রাস দমন, শ্রম বিষয়ক সংকট ও পাচার হওয়া অর্থ পুনরুদ্ধারসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

মানবাধিকার ও বাকস্বাধীনতা সমুন্নত রাখতে বাংলাদেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, তাঁর সরকার দেশে মানবাধিকার ও বাকস্বাধীনতা সমুন্নত রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
স্থানীয় সময় বুধবার এখানে একটি হোটেলে শীর্ষস্থানীয় মানবাধিকার সংগঠনের বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তাঁর সঙ্গে দেখা করতে এলে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বৈঠকে জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান এবং শেখ হাসিনার দীর্ঘ ১৫ বছরের স্বৈরশাসনের সময় সংঘটিত নৃশংসতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিচার ও জবাবদিহিতা নিয়ে আলোচনা হয়।
মানবাধিকার কর্মকর্তারা স্বৈরশাসকের সময় সম্পাদিত প্রায় ৩ হাজার বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অধিকতর তদন্তের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন।
তারা নিরাপত্তা খাতের সংস্কার, সাইবার নিরাপত্তা আইন প্রত্যাহার ও নির্বিঘেœ ন্যায়বিচার প্রাপ্তি এবং শেখ হাসিনার স্বৈর-শাসনামলে বলপূর্বক গুমের শিকার ব্যক্তিদের আটক কেন্দ্রের কার্যক্রমের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
রবার্ট এফ কেনেডি মানবাধিকারের সভাপতি কেরি কেনেডি নয়জন মানবাধিকার কর্মকর্তার প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মহাসচিব অ্যাগনেস ক্যালামার্ডও বৈঠকে যোগ দেন।
ক্যালামার্ড বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত ‘একটি শক্তিশালী বার্তা পাঠানো যে, এটি এক নতুন বাংলাদেশ।’
প্রফেসর ইউনূস কীভাবে পূর্বের স্বৈরাচারী শাসনামলে নাগরিকদের স্বাধীনতা ও মানবাধিকার হরণ করা হয়েছিল এবং তাঁর সরকার দেশে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় এ পর্যন্ত কী করেছে- তা সংক্ষিপ্তভাবে বর্ণনা করেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার ও প্রাতিষ্ঠানিক পরিবর্তনের জন্য তাঁর সরকার পুলিশ সংস্কার সংক্রান্ত একটি কমিশনসহ বেশ কয়েকটি কমিশন গঠন করেছে।
অন্তর্বর্তী সরকার তার কর্মকাণ্ডের যে কোনো সমালোচনাকে স্বাগত জানাবে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসন বাকস্বাধীনতা বজায় রাখার অঙ্গীকার করেন।
ড. ইউনূস আরো বলেন, ‘এই সরকার কোনো সমালোচনায় বিচলিত নয়। আসলে আমরা সমালোচনাকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। সরকার দেশে কারো কণ্ঠরোধ করবে না।’
হংকং-ভিত্তিক সাবেক মানবাধিকার কর্মী মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান ও হিউম্যান রাইটস ওয়াচের সিনিয়র গবেষক জুলিয়া ব্লেকনারও বৈঠকে বক্তৃতা করেন।

তরুণরাই নতুন বাংলাদেশ গড়বে
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশের তরুণেরাই নতুন বাংলাদেশ গড়বেন বলে আশা ব্যক্ত করেছেন।
মঙ্গলবার নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের প্রতিষ্ঠান ‘গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ’-এর আয়োজনে এক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে ড. ইউনূস এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে শান্তিতে নোবেলজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বিল ক্লিনটনের সঙ্গে তাঁর পরিচয় ও সম্পর্কের প্রথম দিনের গল্প, যুক্তরাষ্ট্রে গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠার কাহিনি এবং বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের নানা বিষয় তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানের মঞ্চে ড. ইউনূস তাঁর দীর্ঘদিনের বন্ধু সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের সঙ্গে নানা বিষয়ে কথা বলার ফাঁকে তাঁর সফরসঙ্গীদের দুইজনকে পরিচয় করিয়ে দেন। প্রধান উপদেষ্টা তাঁর বিশেষ সহকারী মো. মাহফুজ আলমকে সাম্প্রতিক কোটা সংস্কার আন্দোলন ও পরে সরকার পতনের আন্দোলনের মূল কারিগর হিসেবে তুলে ধরেন।
একপর্যায়ে মাহফুজকে সামনে এগিয়ে দিয়ে ড. ইউনূস বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থানের পেছনের মূল কারিগর মাহফুজ। যদিও মাহফুজ সব সময় বলে, সে একা নয়, আরো অনেকে ছিল। তবে সে গণ-অভ্যুত্থানের পেছনের কারিগর হিসেবে পরিচিত।’
অনুষ্ঠানের শুরুতে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ক্লিনটন অধ্যাপক ইউনূসকে বাংলাদেশের তরুণদের ডাকে সাড়া দিয়ে দায়িত্ব নেয়া নেতা বলে পরিচয় করিয়ে দেন। এ সময় পুরো হল করতালিতে মুখরিত হয়ে ওঠে। দুই নেতা পরস্পরের সঙ্গে কোলাকুলি করেন।
বিল ক্লিনটন বলেন, আমার জানা মতে, ‘আপনিই (ড. ইউনূস) একমাত্র প্রবীণ, যাঁকে দেশের তরুণরা তাঁর নিজের অনন্যসাধারণ অর্জনের জন্য ক্ষমতায় বসিয়েছে।’
ড. ইউনূস বিল ক্লিনটনের সঙ্গে তাঁর প্রথম যোগাযোগের ঘটনা উল্লেখ করে তাঁর বক্তব্য শুরু করেন।  দেশে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া কয়েকজন শিক্ষার্থীও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। ড. ইউনূস তাঁদের কথাও বলেন। পুরো হল আবার করতালিতে মুখরিত হয়। তিনি তাঁদের মঞ্চে ডেকে নিয়ে আনেন।
এ সময় ড. ইউনূস বলেন, ‘আমি বুঝতে পারছিলাম না, বাংলাদেশে কী ঘটছে। হঠাৎ বাংলাদেশের সব তরুণ একত্রিত হয়েছেন এবং বলছেন, যথেষ্ট হয়েছে। আমরা আর এসব (অন্যায়, বৈষম্য) সহ্য করব না। তাঁরা সহ্য করেননি, তাঁরা সরকারের (ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা সরকারের) ছোড়া গুলির সামনে বুক পেতে নিজেদের জীবন দিয়েছেন।’
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘তাঁদের দেখতে অন্য তরুণদের মতোই মনে হয়। তাঁদের আলাদা করে মনে রাখতে পারবেন না। কিন্তু যখন তাঁদের কথা শুনবেন, তাঁদের কাজ দেখবেন, শিহরিত হবেন। তাঁরা পুরো দেশকে নাড়িয়ে দিয়েছেন।’
‘তরুণেরা নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন। আমি কিছু ভিডিও দেখেছি। তাঁরা সেখানে এমনভাবে দাঁড়িয়ে ছিলেন, বলছিলেন, ‘আমাদের কতজনকে আপনারা হত্যা করতে পারবেন? আমরা এখানে আছি, আমাদের হত্যা করুন। কিন্তু আমরা বিশ্বকে বদলে দিয়েই ছাড়ব, আমরা বাংলাদেশকে বদলে দেব।’ এটাই তাঁদের প্রতিজ্ঞা ছিল, তাঁরা নতুন একটি বাংলাদেশ গড়তে চেয়েছেন’, বলেন মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি আরো বলেন, ‘আগামীর বাংলাদেশ হবে তরুণদের বাংলাদেশ। তাঁরা এই প্রতিজ্ঞা করেছিলেন। আগের সরকার চলে যাওয়ার পর তাঁরা আমাকে দেশের নেতৃত্ব নিতে আমন্ত্রণ জানান। আমি সেটাই করার চেষ্টা করছি। তরুণেরা জাতিকে যে স্বপ্ন দেখিয়েছেন, সেটি বাস্তবায়নের চেষ্টা করছি।’
এ বিষয়ে অধ্যাপক ইউনূস আরও বলেন, ‘তাঁরা যেভাবে (আন্দোলন) করেছেন, তাতে পুরো জাতি এক হয়েছে। পুরো দেশের মানুষ এবার তরুণদের সমর্থন দিয়েছেন।’
ড. ইউনূস বলেন, ‘আমরা আরো এগিয়ে যেতে চাই। নতুন বাংলাদেশ গড়তে চাই। তাঁরা (তরুণেরা) বলেছেন আমরা ‘রিসেট বাটন’ চেপেছি। সব পুরোনো শেষ। এখন আমরা নতুন বাংলাদেশ গড়ব।’
মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘দেশ গড়তে, নিজেদের গড়তে যে শব্দমালায়, যে ভাষায় তাঁরা (আন্দোলনকারীরা) কথা বলেছেন, তা অসাধারণ। আমি আগে কখনো এভাবে কাউকে কথা বলতে শুনিনি। তাঁরা তাঁদের স্বপ্ন বাস্তবায়নের কাজ করতে প্রস্তুত। তাঁরা যেভাবে কথা বলেছেন, তা সারা বিশ্বের তরুণদের অনুপ্রেরণা জোগাবে।’
ড. ইউনূস তরুণদের স্বপ্ন সত্য করতে তাদের সাহায্য ও সমর্থন কামনা করে বলেন, আমরা একসঙ্গে এ দায়িত্ব নিতে পারি।
অনুষ্ঠানো ক্লিনটন বলেন, ‘আমি মনে করি, আমাদের সবার বাংলাদশের মঙ্গল কামনা ও তাদের সহায়তার জন্য যা করা দরকার, তা করা উচিত।’
এরপর ক্লিনটন ড. ইউনূসকে ধন্যবাদ দিয়ে বিদায় নিতে গেলে ড. ইউনূস বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে কিছু বলতে চান। তিনি বলেন, ‘তরুণরা সব সময় তরুণদের নিয়ে কথা বলতে চান। তরুণদেরই নেতৃত্ব দেওয়া উচিত। আমাদের মতো বুড়োদের নয়।’

শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের সম্মুখীন করা উচিত
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের সম্মুখীন করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন।
বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে এক অনুষ্ঠানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের সম্মুখীন করা উচিত বলে মনে করেন কি-না জানতে চাওয়া হলে ড. ইউনূস পাল্টা প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন: ‘কেনো উচিত হবে না?’ এর পর বলেন, ‘তিনি যদি অপরাধ করে থাকেন, তাহলে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনা এবং বিচারের সম্মুখীন করা উচিত। আপনি তো বিচারের পক্ষে কথা বলছেন, তাহলে উনারও তো বিচারের সম্মুখীন হওয়া উচিত।’
যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী পত্রিকা নিউইয়র্ক টাইমস ‘ক্লাইমেট ফরওয়ার্ড’ শীর্ষক ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে অধ্যাপক ইউনূস এখন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন।
ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান। পরে ছাত্র-জনতা শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ইউনূসকে ক্ষমতা গ্রহণের আমন্ত্রণ জানায় এবং তিনি সে আমন্ত্রণ গ্রহণ করেন। তিনি ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশে কবে নির্বাচন হবে, তার কোনো সময়সীমা তাঁর কাছে নেই। যে কয়েকটি কমিশন গঠন করা হয়েছে, তারা সামনের মাসগুলোতে সংস্কার সুপারিশ করবে বলে আশা করা হচ্ছে। তারপর নির্বাচনের জন্য একটি তারিখ নির্ধারণ করা হবে।
এক প্রশ্নের উত্তরে ড. ইউনূস বলেন, নির্বাচনে দাঁড়ানোর কোনো পরিকল্পনা তাঁর নেই। তিনি পাল্টা প্রশ্ন করেন ‘আমাকে দেখে কি মনে হয় আমি নির্বাচনে লড়ব?’
গণপিটুনি বা মব জাস্টিস সংক্রান্ত এক প্রশ্নের উত্তরে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এ বিষয়ে আপনারা বাইরে থেকে ‘অতিরঞ্জিত’ খবর পাচ্ছেন। যা ঘটছে সেটাকে বাড়িয়ে বলা হচ্ছে। তিনি বিদেশি সাংবাদিকদের বাংলাদেশে আসার আমন্ত্রণ জানিয়ে তিনি বলেন, আপনারা নিজ চোখে যেটা দেখবেন সেটাই রিপোর্ট করেন।
‘ক্লাইমেট ফরওয়ার্ড’ শীর্ষক ওই অনুষ্ঠানে ড. ইউনূস বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত বিশ্ব বর্তমান অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় আটকে থাকবে, ততক্ষণ জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত প্যারিস চুক্তি কার্যকর হবে না।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সীমিত করার লক্ষ্যে ‘প্যারিস চুক্তি’ করা হয়। বৈশ্বিক এই চুক্তি ২০১৬ সালে কার্যকর হয়।
অর্থনীতিবিদ ড. ইউনূস বলেন, এই ব্যবস্থা (অর্থনৈতিক ব্যবস্থা) সর্বোচ্চ মুনাফা-কেন্দ্রিক। ব্যবস্থাটি একটি ক্ষুদ্র গোষ্ঠীর জন্য সম্পদ তৈরি করছে। এটি ব্যাপক বর্জ্য উৎপন্ন করছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা যে অর্থনৈতিক ব্যবস্থা তৈরি করেছি, তা এই গ্রহ ধ্বংসের মূল।’ তিনি বলেন, মানুষ একটি ‘আত্মবিনাশী সভ্যতা’ তৈরি করেছে।
ড. ইউনূস বলেন, চুক্তিতে যে পরিবর্তনই করা হোক না কেন, বিশ্বের মৌলিক ব্যবস্থাগুলোকে নতুন করে না সাজানো পর্যন্ত তা কোনো পার্থক্য বয়ে আনবে না।
ড. ইউনূস বলেন, ধনী দেশগুলোর মাধ্যমে হওয়া জলবায়ুর ক্ষতির বোঝা বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর বহন করা উচিত নয়।
‘ক্লাইমেট ফরওয়ার্ড’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে বিজ্ঞানী, উদ্ভাবক, অধিকারকর্মী ও নীতিনির্ধারক পর্যায়ের ব্যক্তিত্বরা যোগ দেন।

Share This