বৃহস্পতিবার, ৩০শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শার্শার উলাশীতে জেলে পাড়ায় হামলা : ২জন আহত কেড়ে নিয়েছে ইজারা নেওয়া জলাশয়ের সিডিউল।।

শার্শার উলাশীতে জেলে পাড়ায় হামলা : ২জন আহত কেড়ে নিয়েছে ইজারা নেওয়া জলাশয়ের সিডিউল।।

১৯ Views

নিজস্ব প্রতিবেদক : যশোরের শার্শা উপজেলার উলাশী জেলে পাড়ায় দূর্বৃত্তদের অতর্কি হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় জেলে পাড়ার দুই জেলেকে পিটিয়ে জখম করা হয়েছে। এ ঘটনায় উলাশী জেলে সম্প্রদায় তাদের নিরাপত্তার জন্য শার্শা উপজেলা নির্বাহী অফিসার, শার্শা থানা ইনচার্জ ও শার্শা উপজেলা বিএনপি বরাবর সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগে অভিযোগ করেছেন। ঘটনাটি ঘটেছে গত ২৬ জানুয়ারী রাতে শার্শার উলাশী গ্রামে। এ ঘটনায় উলাশী জেলে পাড়ায় আতংক বিরাজ করছে। তারা আবারো তাদের উপর নতুন করে হামলা হওয়ার আশংকায় রয়েছে।
তাদের লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, তারা গত ৩ বছর ধরে উলাশী গ্রামের ১৮ একরের একটি বদ্ধ বেত্রাবতি জলাশয় একটি সমিতির মাধমে সরকারের নিকট থেকে বাৎসরিক লিজ নিয়ে মৎস চাষ করে তাদের জীবীকা নির্বাহ করে আসছে। সেই সুবাদে নতুন করে আবারো জলাশয়টি ইজারা নেওয়ার জন্য জেলে সমিতি নতুন করে অন লাইনের মাধ্যমে সিডিউল জমা দেয়। এর আগে বিগত বিএনপি সরকারের আমলে উলাশী সাখাওয়াত হোসেন, পরান, বদিউজ্জামান, বাবলু জিহাদ ও আওয়ামীলীগ আমলে মিলন মেম্বর এ বেত্রাবতি জলাশয়টি মৎস চাষ করতো।
অভিযোগে আরও জানা যায়, উলাশী জেলে সম্প্রদায় নতুন করে তাদের মৎস চাষের জন্য উক্ত জলাশয়টি ইজারার নিতে সিডিউল ক্রয় করে অন লাইনের মাধমে জমা দেয়। সিডিউল জমা দেওয়ার খবর শুনে উত্তেজিত হয় উলাশী গ্রামের একদল দূর্বৃত্ত। এরপর রবিবার বিকালে ঐ দূর্বৃত্তরা উলাশী গ্রামের মৃত দ্বীন মোহাম্মদ এর ছেলে ইউপি সদস্য বদিউজ্জামান (৫৫), মৃত মতিয়ার রহমানের ছেলে সাখাওয়াত হোসেন (৫৮), মৃত করিম মেম্বরের ছেলে আবু বক্কর পরান (৬০), জিহাদ আলী (৫০), মৃত আতিয়ার রহমানের ছেলে উলাশী মাধমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বাবলুর রহমান (৫০) এর নির্দেশে রফিকুল (৪৫), তাজউদ্দিন লেটা (৪৮), আসাদুল (৪৫) ও মফিজুরের নেতৃত্বে ১২ টি মোটর সাইকেল যোগে জেলে পাড়ায় হামলা চালায়। এ সময় তারা জেলে সম্প্রদায়ের সবাইকে হুমকি, ভয় প্রদর্শন ও অশ্লিল ভাষায় গালিগালাজ করে। এরপর দূর্বৃত্তরা উলাশী জেলে পাড়ার মৎস জীবী সমিতির সভাপতি বিন্দা কুমার ও সাধারন সম্পাদক উত্তম মাষ্টারকে জোর পূর্বক উলাশী বাজারে ইউপি সদস্য বদিউজ্জামানের স্থায়ী বিচারালয়ে তুলে নিয়ে আসে। সেখানে আগে থেকে ওৎ পেতে বসে থাকা জিহাদ আলী, রফিকুল, আশাদুল, মফিজুর উত্তেজিত হয়ে সভাপতি বিন্দা কুমার ও সাধারন সম্পাদক উত্তম মাষ্টারকে বেধড়ক মারপিট করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে জোর পূর্বক উলাশী বাজারে ইউপি সদস্য বদিউজ্জামান কেড়ে নেয়া সিডিউল এর কাগজ। এ সময় বদিউজ্জামান মেম্বর, সাখাওয়াত হোসেন, আবু বক্কর পরান ও বাবলু মাষ্টার জেলেদের ইজারা নেওয়া ঐ জলাশয় ছেড়ে দিতে হুমকি দেয়। অন্যথায় তাদের পরিনাম ভালো হবেনা বলে জানান।
এই ঘটনায় উলাশী জেলেপাড়ার ২৭টি পরিবার লিখিত ভাবে তাদের জীবনের নিরাপত্তা পেতে ও তাদের একমাত্র জীবীকা নির্বাহের জলাশয়টি কেড়ে না নেওয়ার জন্য মঙ্গলবার শার্শা উপজেলা নির্বাহী অফিসার, শার্শা থানা ইনচার্জ ও শার্শা উপজেলা বিএনপি বরাবর লিখিত ভাবে সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ তুলে বিচার দাবি করেছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উলাশী গ্রামের একজন বিএনপি নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, গত ৫ আগষ্টের আগে ঘাপটি মেরে থাকা ও আওয়ামীলীগের সাথে আতাত করে চলা ব্যাক্তিরা এখন বিএনপি সেজে বেপরোয়া হয়ে পড়েছে। তাদের অত্যাচার, চাঁদাবাজীতে সাধারন মানুষের উপর জুলুম নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। এদের অন্যায় কাজের কারনে দলের সাধারন নেতা কর্মিরা বিএনপি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে শার্শা থানার অফিসার ইনচার্জ রবিউল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পেলে তা তদন্ত করে অপরাধির বিরুদ্ধে আইনহত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Share This