পঞ্চগড়: পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার কাজলদিঘী কালিয়াগঞ্জ ইউনিয়নের বনগ্রাম ঠাকুরপাড়া এলাকায় ১১ একর জমির বাটোয়ারা মামলা করায় প্রতিপক্ষের হামলা, মামলা,ভাঙচুর এবং হত্যার হুমকিতে নিজ বাড়িতে প্রবেশ করতে পারছেন না বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী ৮টি পরিবার।
মঙ্গলবার ৮ এপ্রিল পঞ্চগড় সদর উপজেলার ঝাকুয়াকালি গ্রামে এক স্বজনের বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ভুক্তভোগী কৃষক জাহাঙ্গীর আলম,তিনি বলেন তাদের সাথে একই এলাকার খোরশেদ আলম, বিরাম চন্দ্র, ধনীরাম, আব্দুল ওহাব বাবু, জাহাঙ্গীর আলম, আব্দুল ওহাব বকুল, সামাদ, তৌহিদুল, হাসান, শাকিল, রফিকুল, আব্দুল মালেক ও আব্দুল খালেকের সাথে জমি নিয়ে বিরোধ দীর্ঘদিনের। প্রায় ১১ একর জমি নিয়ে বিরোধ উভয় পক্ষের মধ্যে। গত ২৫ জানুয়ারি আমরা বাদী হয়ে আদালতে বাটোয়ারা মামলা করি। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন ওই অপরপক্ষ। ওই পক্ষের প্রায় ৭০ টি পরিবার দলবলে গত ১৪ মার্চ ভুক্তভোগি জাহাঙ্গীর, নজরুল, সুলতান, হাসিফুল, সুজন, জমির উদ্দিন ও নবিউলের বাড়িতে কয়েক দফা হামলা করে। এমনকি ওই রাতে দুটি ট্রাক্টর, ১ টি পিকআপ, ঘরবাড়ি ভাঙচুর ও নগদ অর্থ, স্বর্ণালঙ্কারসহ প্রায় ৩ কোটি টাকার সম্পদ লুটপাট করা হয় বলে অভিযোগ করেন সংবাদ সম্মেলনে। এ সময় আহত হয় ৭ জন। তাদের বোদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। প্রতিপক্ষের হাত থেকে বাঁচতে কোন মতে প্রাণ নিয়ে বাড়ি ছাড়ে ওই ৮ টি পরিবারের অর্ধশত সদস্য। বর্তমানে তারা বাড়ি ছেড়ে নিজেদের আত্মীয় স্বজনদের বাসায় দিন কাটাচ্ছেন। এদিকে পরিবার পরিজন নিয়ে ঈদ করতে হয়েছে আত্নীয়ের বাড়িতে। এ ঘটনায় তারা থানায় মামলা করলেও পুলিশ মামলা নেয়নি বলে দাবি করেন তারা। পরে তারা আদালতে মামলা করতে বাধ্য হন।
ভুক্তভোগি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমরা বাটোয়ারা মামলা করার পরেই খোরশেদ সবাইকে একত্রিত করে ৭০ টি পরিবার ও ভাড়াটে লোকজন নিয়ে আমাদের উপর হামলা করে। আমরা ৭ জন আহত হই। আমাদের ৮ টি পরিবারের প্রায় ৩ কোটি টাকার সম্পদ লুটপাট করে নিয়ে গেছে তারা। আমাদের নিজ বাড়িতে যেতে দিচ্ছে না তারা। রাস্তায় তারা ধারালো অস্ত্র নিয়ে বসে থাকে। বর্তমানে আমরা মানুষের বাড়িতে পরিবার পরিজন নিয়ে দিন কাটাচ্ছি।
ভুক্তভোগী নজরুল ইসলাম বলেন, খোরশেদ, বিরাম চন্দ্র, ধনীরাম, আব্দুল ওহাব বাবু, জাহাঙ্গীর আলম, আব্দুল ওহাব বকুল, সামাদ, তৌহিদুল, হাসান, শাকিল, রফিকুল, আব্দুল মালেক ও আব্দুল খালেকের নেতৃত্বে আমাদের উপর হামলা হয়েছে। তারা আমাদের ঘরবাড়ি সব ভাঙচুর করেছে। আমাদেরকে বাড়িতে যেতে দিচ্ছে না।
জাহাঙ্গীরের মা মেহেরুন বেগম বলেন, এবারের ঈদ আমরা করেছি মানুষের বাড়িতে। আমাদের সন্তানরা স্কুল যেতে পারছেন না। কৃষি কাজ থেকে শুরু করে কোন কিছুই আমরা করতে পারছি না। প্রতিনিয়ত তারা হত্যার হুমকি ধামকি দিচ্ছে।
এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে খোরশেদ আলম বলেন,ঘটনার দিন জাহাঙ্গীররা আমাকে ও প্রতিবেশী শাপলা নামের এক নারীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে বার বার আঘাত করে। আমাদেরকে মৃত ভেবে তারা ফেলে পালিয়ে যায়। আমাদের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে তারা নিজেরা নিজেদের বাড়িতে ভাঙচুর করে পালিয়েছে। পরে আমাকে ও শাপলাকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ভাগ্যক্রমে আমরা বেঁচে যাই। আমার শরীরের ১০ স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাত। আমরা তাদের বাড়ি ঘর ভাংচুর করি নাই।
এবিষয়ে বোদা থানার ওসি আজিম উদ্দিন বলেন, ওই ঘটনায় উভয়পক্ষই মামলা করেছেন। বাদী সাক্ষর না করায় তাদের মামলটি নথিভূক্ত হয় নি। পুলিশ তো তাদের গ্রেপ্তার করতে যায় নি তাহলে তারা বাড়িতে থাকতে পারবে না কেন? এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক তারা নিজ বাড়িতেই থাকতে পারবেন। মামলার তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রধান উপদেষ্টা : ড. সরকার মো.আবুল কালাম আজাদ,
সম্পাদক ও প্রকাশক : একরামুল হক বেলাল,
নির্বাহী সম্পাদকঃ জিকরুল হক
ঢাকা অফিস- ২২, মা ভিলা ,পূর্ব তেজতুরী বাজার, ফার্মগেট-১২১৫। ইমেইল-spnews17@gmail.com ০১৩১৪১৪৬৬৬২ রেলওয়ে পার্ক,পার্বতীপুর,দিনাজপুর। ০১৭১২৩৭০৮০০
Copyright © 2025 Spnewsbd. All rights reserved.