প্রিন্ট এর তারিখঃ এপ্রিল ১২, ২০২৫, ৪:৩০ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ মে ১৮, ২০২২, ৬:০৯ অপরাহ্ণ
তেঁতুলিয়ায় কৃষক ক্ষেতে দেখা মিললো ড্রাগন ফলের চাষ

জুলহাস উদ্দীন তেঁতুলিয়া উপজেলা প্রতিনিধি : তেঁতুলিয়ায় প্রথমবারের মতো শুরু হয়েছে ড্রাগন ফলের চাষ। পরীক্ষামূলকভাবে ভিনদেশী ফলের চাষ করা হচ্ছে উপজেলার তিরনইহাট ইউনিয়নের ফুটকীবাড়ি গ্রামে। ওই এলাকার মুহম্মদ খোদা বক্সের পুত্র শুরু করেছেন আব্দুল কাদের জিলানী নামের এক তরুণ। এ এলাকায় প্রথম ড্রাগন ফলের চাষের খবর শুনে বাগানটি প্রতিদিন দেখতে বিভিন্ন বয়সী দর্শনার্থী।
সোমবার দুপুরে কথা হয় ড্রাগন ফল চাষী খোদা বক্সের সাথে। তিনি জানান, গত বছর ফেব্রæয়ারি মাসে আমার ছেলে জিলানী ১৫ শতক জমিতে সাড়ে তিনশত ড্রাগন ফলের চারার কাটিং রোপন করা হয়। রোপনের এক বছর পর গাছগুলোতে ফুল আসতে শুরু করেছে। কোন কোন গাছে ফলও ধরেছে। এ পর্যন্ত কয়েকটি৪/৫টি ফল খাওয়া হয়েছে। বেশ সুস্বাদু। আগামী এক মাসের মধ্যে ফল পরিপক্ক হবে।
চাষী খোদা বক্স জানান, ভিনদেশি এ ফলের বিষয়ে আমি কিছুই জানতাম না। ছোট ছেলে আব্দুল কাদের জিলানী টাংগাইলের ঘাটাইল থেকে ড্রাগন ফল চাষ দেখে বাড়িতে এসে তা রোপনের কথা জানায়। ছেলের আগ্রহের প্রতি গুরুত্ব দিয়ে প্রথমত ড্রাগনের উপযুক্ত জমি তৈরি করে রোপন করি। ক্ষেত, মজুরীসহ দেড়লাখ টাকা খরচ হয়েছে। তবে খরচ বড় কথা নয়, এ এলাকায় প্রথম ড্রাগনের চাষ করছি বেশ ভালো লাগছে। ড্রাগনের ফুলে আনন্দ দোল খাচ্ছে।
উদ্যোক্তা আব্দুল কাদের জিলানী মুঠোফোনে আমাদের সময়কে জানান, একটি বেসরকারি এনজিওতে চাকরির সুবাধে টাংগাইলের ঘাটাইলে ড্রাগন ফল চাষ দেখে উদ্বুদ্ধ হই। পরে ড্রাগন ফল চাষ জানতে ইউটিউবে ধারণা নিয়ে টাংগাইল থেকে চারটি জাতের ড্রাগন ফলের কাটিং সংগ্রহ করে বাড়ির পাশে ১৫ শতক জমিতে রোপন করি। বিশেষ করে ড্রাগন গাছ গরু-ছাগলে খাওয়ার ভয় থাকে না বলে পতিত জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে চাষ শুরু করেছি। আশা করছি সফল হবো। সফল হলে বড় পরিসরে ড্রাগনের চাষ শুরু করবো।
ড্রাগন ফলের চাহিদা কেমন তা জানতে চাইলে এ উদ্যোক্তা জানান, ড্রাগন ফলের ব্যাপক চাহিদা আছে। এ ফলের উৎপাদন আশানুরূপ হলে লাভবানও হওয়া যায়। বাজারে আগাম আনতে পারলে কেজিতে ৪শ-৫শ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করা যায়। পরে সর্বনি¤œ হলেও ২৫০-৩শ টাকা পর্যন্ত বাজারে বিক্রি হয়ে থাকে।
জানা যায়, ড্রাগন মূলত আমেরিকার প্রসিদ্ধ একটি ফল। যা ইতিমধ্যে বাংলাদেশেও পরিচিতি লাভ করেছে। ২০০৭ সালে সর্বপ্রথম থাইল্যান্ড, ফ্লোরিডা ও ভিয়েতনাম থেকে এই ফলের বিভিন্ন জাত বাংলাদেশে এনে চাষ করা হয়। ক্যাকটাস জাতীয় গাছ হওয়ায় এ গাছের কোন পাতা নেই। তেমন কোন খরচ নেই। শুধু ফলকে নিরাপদ রাখতে ছত্রাকনাশক স্প্রে করতে হয়। ফুল ফোটার এক মাসের মাথায় ড্রাগন ফল তোলার উপযুক্ত হয়।
ড্রাগন ফলের গাছ সাধারণত ১.৫ থেকে ২ দশমিক ৫ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। ৪ থেকে ৫ ফিট দূরত্বে লাগাতে হয় গাছ। এ ফলের আকার বড়, পাকলে খোসার রং লাল হয়ে যায়, শাঁস গাঢ় গোলাপী রঙের, লাল ও সাদা এবং রসালো প্রকৃতির। ফলের বীজগুলো ছোট ছোট কালো ও নরম। খেতে সুস্বাদু। ফলটি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। কোলেস্টেরলের ক্ষেত্রেও উপকারী। ড্রাগন ফলের ফ্যাট ও প্রোটিনের পরিমাণও অনেক বেশি এবং এটি বাতের রোগও দূর করে। ড্রাগন ফল হার্ট সংক্রান্ত রোগও দূরসহ বেশ কয়েকটি উপকার রয়েছে ড্রাগন ফলে।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ জাহাঙ্গীর আলম জানান, ড্রাগন ফল চাষে উঁচু ও জৈব পদার্থ সমৃদ্ধ বেঁলে দোআঁশ মাটি যেখানে কখনোই পানি জমাট বাঁধে না এরকম জমি উপযুক্ত। আর দরকার সময় মতো সঠিক পরিচর্যা। সেক্ষেত্রে ড্রাগন চাষের জন্য তেঁতুলিয়ার মাটি উপযুক্ত। বিশেষ করে এখানকার কৃষকরা এখনো এ ফলটির সাথে তেমনভাবে পরিচিত নয়। মূলত ড্রাগন ফল চাষে কিছুটা পুঁজি বিনিয়োগ করতে হয়। তবে হালকা মিষ্টি এ ফলটি খুবই পুষ্টিগুণ সম্পন্ন ও বাংলাদেশের বাজারে যথেষ্ট জনপ্রিয়। ফলে আগ্রহী কৃষকেরা সহজেই এটি চাষ করে লাভবান হতে পারে। এ এলাকায় বেশ কয়েকজন সৌখিন কৃষক ড্রাগন চাষ করছে। তাদেরকে যাবতীয় পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।
প্রধান উপদেষ্টা : ড. সরকার মো.আবুল কালাম আজাদ,
সম্পাদক ও প্রকাশক : একরামুল হক বেলাল,
নির্বাহী সম্পাদকঃ জিকরুল হক
ঢাকা অফিস- ২২, মা ভিলা ,পূর্ব তেজতুরী বাজার, ফার্মগেট-১২১৫। ইমেইল-spnews17@gmail.com ০১৩১৪১৪৬৬৬২ রেলওয়ে পার্ক,পার্বতীপুর,দিনাজপুর। ০১৭১২৩৭০৮০০
Copyright © 2025 Spnewsbd. All rights reserved.