আজিজ খান, গোলাপগঞ্জ(সিলেট) থেকে: করোনার ধকল কাটিয়ে দুই বছর পর অনেকটা স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে সবকিছু, ব্যবসায়ীরাও এর বাইরে নয়, ক্ষতি পুষিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে ঈদুল ফিতর কে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছেন গোলাপগঞ্জ উপজেলার দর্জিপাড়ার কারিগররা। ঈদে ফ্যাশনপ্রিয় তরুণ-তরুণীরা রেডিমেইড পোশাকের পাশাপাশি নিজের পছন্দ মতো বানানো পোশাকেরও চাহিদা থাকায় দর্জিপাড়ায় বিরামহীনভাবে চলছে সেলাই যন্ত্রের খটখট শব্দ। দম ফেলার ফুরসত নেই। রয়েছে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পোশাক সরবরাহের চাপে এখন দর্জিপাড়ায় কারিগরদের ঘুম হারাম। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত পোশাক তৈরিতে চলছে ঘুমহীন, বিশ্রামহীন শ্রমিকের কাজ।
সরেজমিনে গতকাল বৃহস্পতিবার গোলাপগঞ্জ, হেতিমগঞ্জ, ঢাকাদক্ষিণ বাজার, ভাদেশ^র বাজারের বিভিন্ন টেইলার্সের দোকান ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় সব টেইলার্সেই নতুন জামা কাপড় তৈরি করতে ভিড় জমাচ্ছেন নারী, পুরুষ, শিশুসহ নানা বয়সের গ্রাহকরা। উৎসব আসলেই দর্জির দোকানগুলোতে যেমন নারী-পুরুষের পদচারণা বাড়তে থাকে দীর্ঘ করোনা প্রার্দুভাব কাটিয়ে এবার আবারও বিপণী বিতানগুলোতেও তরুন-তরুণী ও বিভিন্ন বয়সের নারীদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো। তৈরিকৃত পোশাক অনেক সময় শরীরের সাথে পুরোপুরি মানানসই হয় না, ফলে অনেকে পিস কাপড়ে দর্জির সেলাই করা পোশাকের প্রতি আগ্রহ থাকে বেশি। এদিকে দর্জির এখন নতুন অর্ডার না নিয়ে, পূর্বের গ্রাহকদের সময়মতো অর্ডার দেয়ায় ব্যস্ত। আবার কিছ কিছুু দর্জি দোকানে সেলাই কাজের অর্ডার এখনও নিচ্ছেন। যদিও এ বছর বিভিন্ন এলাকায় দর্জি দোকানগুলোর ব্যস্ততা বাড়ছে ধীরগতিতে বলছেন দর্জিরা।
ক্রেতারা জানান, ছেলেমেয়েদের চাহিদা অনুযায়ী ভাল কাপড় কিনে পছন্দের পোশাক তৈরির জন্য দর্জির দোকানে এসেছেন। কেউ পছন্দ করেন তৈরিকৃত পোশাক, আবার নিজ পছন্দের ডিজাইনে তৈরি করা পোশাকে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। এক্ষেত্রে তরুণ-তরুণী আর বিভিন্ন বয়সের নারীর সংখ্যাই বেশী। তবে গতবারের তুলনায় এবার মজুরি ১’শ থেকে ২’শ টাকা পর্যন্ত বেড়ে গেছে।
দর্জি কারিগর তাহের, সালাম ও রিপা জানান, বিভিন্ন কাজের ওপর ভিত্তি করে কাজের মজুরি পান তারা। তবে এবার কাজের মজুরি বাড়িয়ে দিয়েছেন টেইলার্স মাস্টাররা। এ কারণে কারিগররাও এবার মজুরি বেশি পাচ্ছেন।
পারভিন লেডিস, হাইফাই, জনতা, আল-কামাল টেইলার্সসহ বেশিরভাগ টেইলার মাস্টাররা জানান, সারা বছর উৎসব বাদেও স্কুল ড্রেস তৈরির অর্ডার হয়ে থাকে, তবে করোনার কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় অনেকটাই ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছে তাদের। এ বছর ঈদ কে সামনে রেখে ক্রেতারা কাপড় কিনে বিভিন্ন দর্জির দোকানে তাদের পছন্দের পোশাক বানাচ্ছেন। এতে করে কিছুটা ক্ষতি পুষিয়ে ঘুরে দাঁড়াবেন তারা।
সূর্যমুখী লেডিস টেইলার্সের স্বত্বাধীকারী শফিক উদ্দিন আহমদ জানান, মেয়েদের জিপসি, লেহেঙ্গা, থ্রি-পিছ, সালোয়ার কাজের প্রচুর অর্ডার পাচ্ছি। কারিগররাও এবার রাত-দিন কাজ করছেন। কাপড় আর ডিজাইন ভেদে মজুরি নিচ্ছি আমরা। আশা করছি চাঁদরাতের আগে সবার জামা, প্যান্ট ডেলিভারী দিতে পারবো।
একই কথা বলেন কাপড় ব্যবসায়ী মাওলানা নুমান, সিরাজসহ বিভিন্ন বিপনি বিতানের ব্যবসায়ীরা। এবছর কাপড়ের দাম একটু চড়া, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর মূল্য বেশি দিয়ে কিনতে হচ্ছে দাবি কাপড় ব্যবসায়ীদের।
এদিকে দর্জি কারখানাগুলোতে অতিরিক্ত কারিগর নিয়োগ করে গভীর রাত পর্যন্ত ক্রেতাদের চাহিদা মোতাবেক পোশাক তৈরির কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন কারিগরা। যাতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পোশাক সরবরাহ করা যায়। কারিগরদের নিপুণ হাতের ছোঁয়ায় মানসম্পন্ন বিভিন্ন ডিজাইনের পোশাক তৈরির জন্য গ্রাহকরাও ছুঁটছেন শহরের পছন্দ মত মানসম্পন্ন টেইলার্সে।
সাথি টেইলার্সের স্বত্বাধিকারী কাজি শিমুল জানান, যুগের সাথে তাল মিলিয়ে আধুনিক ফ্যাশন ডিজাইনের পোশাক বানানোর কারণে ক্রেতারা এখানে আসেন। ঈদে বাড়তি চাপ থাকে। তবে পর্যাপ্ত কাজ পাওয়ায় বর্তমানে অর্ডার নেয়া বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ডিজাইনের ওপর নির্ভর করে মজুরি নেয়া হচ্ছে।
প্রধান উপদেষ্টা : ড. সরকার মো.আবুল কালাম আজাদ,
সম্পাদক ও প্রকাশক : একরামুল হক বেলাল,
নির্বাহী সম্পাদকঃ জিকরুল হক
ঢাকা অফিস- ২২, মা ভিলা ,পূর্ব তেজতুরী বাজার, ফার্মগেট-১২১৫। ইমেইল-spnews17@gmail.com ০১৩১৪১৪৬৬৬২ রেলওয়ে পার্ক,পার্বতীপুর,দিনাজপুর। ০১৭১২৩৭০৮০০
Copyright © 2025 Spnewsbd. All rights reserved.